অতিমারি পরিস্থিতির কারণে গত দু’বছর প্রায় স্তব্ধ ছিল গোটা রাজ্য তথা দেশ। বন্ধ ছিল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন (বিজিবিএস)-ও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে চলতি বছর ফের বসল বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের আসর। আজ, বুধবার থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে দুই দিন ব্যাপী এই শিল্প সম্মেলন। ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে বিশ্ব বাংলা কনভেনশন সেন্টার। মোট ১৪টি দেশের প্রতিনিধিরা এবার যোগ দিতে চলেছেন বিশ্ববঙ্গ শিল্প সম্মেলনের আসরে। থাকছেন আমেরিকা, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বাংলাদেশ, ভুটান, অস্ট্রেলিয়া, নরওয়ে, ফিনল্যান্ড, জাপান, কেনিয়ার মতো দেশের শিল্প প্রতিনিধিরা।
প্রসঙ্গত, রাজ্যে বিনিয়োগ নিয়ে আসার জন্য সোশ্যাল, ফিজিকাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার সহ অনেককিছু তৈরি করতে হয়। রাস্তা, বন্দর, বিমানবন্দর এই সবকিছুই যুক্ত থাকে এর মধ্যে। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়ানো এবং সরকারের বিভিন্ন শিল্পবান্ধব পলিসিও যুক্ত থাকে এর সঙ্গে। এর পাশাপাশি প্রয়োজন রাজ্যের ব্র্যান্ডিং। এই বছরের সম্মেলনে দেশই বিদেশি প্রতিনিধিদের সামনে এই রাজ্যে শিল্পস্থাপনের সুবিধা ছাড়াও ব্র্যান্ড বাংলাকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন মুখ্যমন্ত্রী। কনভেনশন সেন্টারে একটি ডোম বানানো হয়েছে যার মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ বাংলাকে রিপ্রেজেন্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাংলার পট শিল্প, ফোক শিল্প, সংস্কৃতি, টেরাকোটার পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালি সব কিছুকে তুলে ধরা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার নৈশভোজের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে শিল্প সম্মেলনের আসর। সেখানে এই বিষয়ে আলোচনা সেরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সাথে লগ্নী নিয়েও কথা বলেন তিনি। তারপর থেকেই নজরে আজ কোন সংস্থা কোন ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে এই রাজ্যে। এবারের সম্মেলনে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ আসতে পারে তাজপুর গভীর সমুদ্র বন্দরকে ঘিরে ৷ সূত্রের খবর, এখানে বিনিয়োগ করতে পারে আদানি গোষ্ঠী। বিড়লা গোষ্ঠীর সিমেন্ট ও বস্ত্র কারখানা আছে। এবার গড়ে উঠতে পারে রঙের কারখানা। এছাড়া আজকের শিল্প সম্মেলনের মঞ্চ থেকে আরও কিছু ঘোষণা করতে পারেন কুমারমঙ্গলম বিড়লা। এমনটাই আশা করছে শিল্প মহল। গাড়ি বা গাড়ির যন্ত্রাংশ তৈরিতেও বড় বিনিয়োগ আসতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে৷
আজকে হাজির থাকার কথা মহিন্দ্রা অ্যান্ড মহিন্দ্রার প্রতিনিধিরা। আজ তাদের তরফ থেকেও ঘোষণা হতে পারে বিনিয়োগ। আর যারা যারা আজকের এই মঞ্চে হাজির থাকতে পারেন তারা হলেন, আদানি গোষ্ঠীর কর্ণধার গৌতম আদানি, আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান কুমারমঙ্গলম বিড়লা, হিন্দুস্থান ইউনিলিভারের এমডি সঞ্জীব মেহতা, জেএসডাব্লু গোষ্ঠীর সজ্জন জিন্দল, এসবিআই-এর চেয়ারম্যান দীনেশ কুমার খাঁড়া এবং মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা সংস্থার শীর্ষ কর্তা। এছাড়া থাকছেন আর বি মিত্তল, ওয়াই কে মোদী, নিরঞ্জন হিরানান্দানি, হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, ওয়াই সি দেবেশ্বর, সঞ্জীব গোয়েঙ্কা, উমেশ চৌধুরী, পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, পুনীত ডালমিয়া।