১১ বছর আগে লেখা প্রতিবেদনে ‘দেশদ্রোহের ছায়া’। সেই অভিযোগে জম্মু ও কাশ্মীরে ‘বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনে’ (ইউএপিএ) গ্রেফতার এক পিএচডি পড়ুয়া। রবিবারের এই ঘটনায় রীতিমতো বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছে গোটা দেশে। প্রশ্ন উঠছে, এবার কি তাহলে ‘মুক্তচিন্তা’ ও ‘বিরোধী কণ্ঠে’ আইনের লাগাম পরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।
কাশ্মীর ইউনিভার্সিটিতে ফার্মাসিইউটিক্যাল সায়েন্সে পিএচডি করছেন ৩৯ বছরের আবদুল আলা ফাজিলি। রবিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে কাশ্মীর পুলিশ। জানা গিয়েছে, পড়াশোনার পাশাপাশি উপত্যকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও লেখালেখি করেন তিনি। ২০১১ সালের ৬ নভেম্বর ‘দ্য কাশ্মীর ওয়ালা’ নামের অনলাইন নিউজ ম্যাগাজিনে একটি প্রতিবেদন লেখেন ফাজিলি। আর ‘দাসত্বের শৃঙ্খল ভাঙবে’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিকে নিয়েই দেখা দিয়েছে সমস্যা।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সদ্য গঠিত ‘স্টেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’র দাবি, ফাজিলির আর্টিকাল উস্কানিমূলক এবং সেখানে দেশদ্রোহের কথা বলা হয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকার অশান্তি ছড়াতেই এই প্রতিবেদন লেখা হয়েছে। সেখানে সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত করে যুবকদের হিংসার পথে ঠেলে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। ‘স্বাধীনতা’ ও ‘মুক্তি’র পক্ষে সওয়াল করা ওই প্রতিবেদনে আইএসআই প্রোপাগান্ডার ছায়া রয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ২০১৬ সালে কাশ্মীর জুড়ে শুরু হওয়া গণবিক্ষোভের মুখ হয়ে ওঠেন ফাজিলি। অভিযোগ, গবেষণার জন্য ভারত সরকার থেকে স্কলারশিপ নিলেও দেশবিরোধী বয়ান দেন ওই ছাত্র। বছর পাঁচেক আগে ফাজিলিকে জেরা করে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। রবিবার ফাজিলির বাড়িতে হানা দেয় কাশ্মীর পুলিশের ‘স্টেট ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি’। একইসঙ্গে, ‘দ্য কাশ্মীর ওয়ালা’র এডিটর ফাহাদ শাহর বাড়িতেও তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। তদন্তকারীদের দাবি, তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু উস্কানি মূলক নথি-সহ ল্যাপটপ ও হার্ডড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে।