প্রথমবার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণের মাধ্যমে রাজকোষ ভরতে চাওয়াই টার্গেট মোদী সরকারের। এবার কাকপক্ষী টের পাওয়ার আগেই বেসরকারিকরণ হয়ে গেল দেড়শ বছরের পুরনো রেল স্টেশনের। হ্যাঁ, হাওড়া বর্ধমান মেন লাইনের ব্রিটিশদের তৈরি করা সিমলাগর রেলস্টেশন, চলে গেল বেসরকারি হাতে। পয়লা এপ্রিল থেকে নাম বদলে খাতায়-কলমে হয়ে গেল হল্ট স্টেশন। হঠাৎ করেই এই রকম সিদ্ধান্ত কিভাবে নেওয়া হল তা জানতে পারলেন না নিত্যযাত্রীরা। ইতিহাস বদলে যাওয়ার এই ঘটনায় হতবাক সকলেই।
শুধু তাই নয়। বেসরকারিকরণ করা হলেও কোন পরিকাঠামো ছাড়াই দিয়ে দেওয়া হয়েছে বেসরকারি হাতে। আর এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। জানা গিয়েছে, টিকিট কাটতে গেলে সরকারি সিলমোহরের বদলে এখন বেসরকারি রাবার স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হচ্ছে টিকিট। তাও আবার যাত্রীদের দাবি মতো গন্তব্যের টিকিট দেওয়া হচ্ছেনা বলেই অভিযোগ। এর ফলে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের।
প্রসঙ্গত, ১৮৫৫ সালে ব্রিটিশ শাসনকালে ব্যান্ডেল-বর্ধমান শাখায় পান্ডুয়ার পরে সিমলাগর স্টেশনটি তৈরি হয়। বিগত কয়েকদিন আগেও যে স্টেশনটি অন্য সকল স্টেশনের মতনই ছিল সেটি পয়লা এপ্রিল থেকে সিমলাগড় হল্ট স্টেশনে রূপান্তরিত হয়েছে। যদিও এখনও সিমলাগর নামের পাশে এখনও হল্ট কথাটি লেখা হয়নি। কিন্তু রেলের কর্মী, স্টেশনমাস্টার থেকে সকলকেই তুলে নেয়া হয়েছে প্ল্যাটফর্ম থেকে। তার জায়গায় দায়িত্ব এসেছে বেসরকারি এজেন্টের কর্মীদের হাতে।
সবথেকে বড় যে সমস্যাটি দেখা দিয়েছে এখান থেকে হাওড়া অথবা অন্য কোনও স্টেশনের টিকিট চাইলে দেওয়া হচ্ছে ব্যান্ডেল পর্যন্ত টিকিট। যাত্রীদের বলে দেওয়া হচ্ছে ব্যান্ডেল স্টেশনে নেমে পরবর্তী গন্তব্য যাওয়ার জন্য সেখান থেকে টিকিট কেটে নেওয়ার জন্য। তার ফলে বাধ্য হয়েই এই ব্রেক জার্নি মেনে নিতে হচ্ছে নিত্যযাত্রীদের। যাত্রীদের প্রশ্ন হঠাৎ করেই কোনও কারণ না দেখিয়ে এবং সকলের অজান্তেই এটা কিভাবে বেসরকারিকরণ হল। তার থেকেও বড় কথা কোনও পরিকাঠামো ছাড়াই স্থায়ী স্টেশনটি কীভাবে রূপান্তরিত হয়ে গেল হল্ট স্টেশনে।