বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনকে আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্যের উৎপাদনকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে বাণিজ্য সম্মেলনের সময় এবারই প্রথম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে একটি ভার্চুয়াল প্রদর্শনী করবে রাজ্য। এর মাধ্যমে গোটা বিশ্ব বাংলার শিল্প সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। বাংলায় প্রস্তুত সামগ্রী কেনার ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ সিদ্ধান্তও নিতে পারবে সংশ্লিষ্টরা। এতে রাজ্যে উৎপাদিত জিনিসের চাহিদা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই উপকৃত হবে এখনকার শিল্প ও বাণিজ্য। নবান্ন সূত্র অনুযায়ী, এই উদ্যোগ মূলত ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি এবং বস্ত্র শিল্প দপ্তরের। এ নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে শুক্রবার। বৈঠকে একটি নতুন পোর্টাল তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, তন্তুজ, রেশম শিল্প উন্নয়ন নিগম, মঞ্জুষা, খাদি সহ হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করে, এমন সব সংস্থাকে তাদের উৎপাদিত সেরা জিনিসের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। সেইসব সামগ্রীর ছবি সহ বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে ওই পোর্টালে। কোন জিনিস কোথায় তৈরি হয়, তার কী ইতিহাস, কীভাবে এবং কী দিয়ে ওই সামগ্রী তৈরি হয়, কীভাবে ক্রয় করা যাবে— সব তথ্যই দেওয়া থাকবে ওই পোর্টালে। এক আধিকারিক জানান, প্রতি বছরের মতো এবছরও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের জন্য একটি অস্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্র থাকবে মিলন মেলা ও তার সংলগ্ন প্রাঙ্গণে। তাতে থাকবে ডোকরা, কাঁথাস্টিচ, বালুচরি, কাঠ ও সোলার কাজ সহ বাংলার উৎপাদিত জিনিসগুলি। এখানে আসা প্রতিনিধিরাই সেসব চাক্ষুষ করতে পাবেন। তাঁদের সংস্থার যে কর্তারা আসতে পারেননি, তাঁদের পক্ষে প্রদর্শিত জিনিস দেখা সম্ভব নয়। অথচ তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না সেই প্রতিনিধিদের। মূলত সেই কারণেই ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর ব্যবস্থা। মনে করা হচ্ছে, এই ভার্চুয়াল প্রদর্শনীর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান হবে। এই পোর্টাল সম্পর্কে প্রচারও করা হবে বাণিজ্য সম্মেলনে। এবারে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন হবে ২০ ও ২১শে এপ্রিল। আর ভার্চুয়াল প্রদর্শনী চলবে এপ্রিলের ২০ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত। অনেক ক্ষেত্রে বিদেশি প্রতিনিধিরা দেশে ফিরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে রাজ্যে তৈরি জিনিস কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। সে কারণে বাণিজ্য সম্মেলনের পরেও তিনদিন চলবে এই ভার্চুয়াল প্রদর্শনী।