কোভিড অতিমারীর কারণে গত দু’বছর রামনবমীর শোভাযাত্রা ও অস্ত্র মিছিলে কিছুটা বাধা পড়েছিল। এবার তে না থাকায় রবিবার রাজ্যজুড়ে একাধিক শোভাযাত্রা বেরোয়। এসবের মধ্যে নজর কেড়েছে একাধিক অস্ত্র মিছিল। এসব মিছিলে খোলা অস্ত্র হাতে শিশু, কিশোরদের আস্ফালন চোখে পড়েছে। কারও হাতে ত্রিশূল, কারও হাতে খোলা তলোয়ার, যা দেখে নাগরিক সমাজের অনেকেই বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিছিলগুলির আয়োজক বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপি। বজরং দলও এরকম একাধিক মিছিল বের করে এদিন। অস্ত্র নিয়ে শিশু-কিশোরদের মিছিলে অংশগ্রহণের পাশাপাশি শোভাযাত্রাগুলিতে তারস্বরে বাজানো হয়েছে ডিজে বক্স। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন এভাবে প্রবল শব্দে অনেকেই বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। উঠেছে নিন্দার ঝড়।
পাশাপাশি, হুগলীর চুঁচুড়ায় রামনবমীর মিছিলে অনেক শিশু ও কিশোরকে অস্ত্র হাতে দাপাদাপি করতে দেখা যায়। এদিন বিভিন্ন জায়গা থেকে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে একাধিক অস্ত্র মিছিল আসে। প্রায় প্রতিটি মিছিলেই নাবালকদের অস্ত্র হাতে দেখা গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গিয়েছে একই চিত্র। এদিন বর্ধমানে রামনবমীর শোভাযাত্রা থেকে পুলিশ কয়েকটি তলোয়ার বাজেয়াপ্ত করেছে। লক্ষ্মীপুর মাঠ থেকে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে ওই শোভাযাত্রা কার্জনগেটের দিকে এলে পুলিশ তা আটকে দেয়। বর্ধমানে তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরাও শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। বীরভূমের সিউড়িতে অস্ত্র মিছিল হয়। হকি স্টিক ও তলোয়ার নিয়ে মিছিলে হাঁটতে দেখা যায় অনেককে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সহযোগিতায় এদিন বহরমপুরে শোভাযাত্রা বেরয়। ভরদুপুরে ডিজের দাপটে নাজেহাল হতে হয় সাধারণ মানুষকে।
এছাড়া একাধিক অস্ত্র মিছিল বেরয় কলকাতা ও সংলগ্ন শহরতলি অঞ্চলেও। খাস কলকাতায় মৌলালির রামলীলা ময়দানে অস্ত্র হাতে আস্ফালন করতে দেখা যায় গেরুয়া বাহিনীকে। গড়িয়া, রানিকুঠি ও যাদবপুর থানা থেকে তিনটি শোভাযাত্রা যাদবপুর এইট বি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত আসে। সেখানেও অস্ত্রের দেখা মিলেছে। উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া, জগদ্দল, বনগাঁ, বসিরহাট শহরে একাধিক মিছিল বেরোয়। তবে সব মিছিলেই অস্ত্র ছিল না। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর, সোনারপুরে একাধিক শোভাযাত্রা বের হয়। এদিনের মিছিলকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে হাওড়ার শিবপুর থানা এলাকার ফজিরবাজারে। সেখানে দু’পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি তা সামাল দেয় বিশাল পুলিশবাহিনী।