এবার নতুন প্যারোডি বানিয়ে রুদ্রনীল ঘোষকে পাল্টা কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। রাজনীতির ময়দানে প্যারোডির খেলা নতুন নয়। নির্বাচনের সময় বরং স্লোগানে-স্লোগানে, দেওয়াললিখনে এই প্রতিযোগিতাই তো চলে। শব্দে, ছন্দে একের বিরুদ্ধে অপরের লড়াইয়ের বার্তা দেওয়া হয়। এই মুহূর্তে ছড়া বেঁধে বাকযুদ্ধে নেমেছেন বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ এবং তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। প্রথমজন কবি জয় গোস্বামীর ‘মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়’ কবিতার মূল চরিত্র বেণীমাধবের আদলে প্যারোডি তৈরি করেছেন ‘অনুমাধব’ নামে। আর দ্বিতীয়জন মূল কবিতার আদলটি বজায় রেখে নিজের কথা দিয়ে ছন্দে বেঁধে আক্রমণের তির ছুঁড়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় এখন ছড়িয়ে পড়ছে রুদ্র ও দেবাংশুর প্যারোডির লড়াই। রুদ্রনীল ঘোষের তৈরি প্যারোডিতে উঠে এসেছে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল, সিবিআই তলব, তাঁর হাসপাতালে ভরতি প্রসঙ্গ। এছাড়া শাসকদলকেও খোঁচা দেওয়া হয়েছে। গরুপাচার মামলায় বুধবার নিজাম প্যালেসে ডাক পড়ে বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের। ওইদিন হাজিরা এড়িয়ে এসএসকেএমে ভরতি হন অনুব্রত। এই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যমে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিলেও, ফেসবুকে প্যারোডি পোস্ট করেছেন রুদ্রনীল। প্যারোডিটি এরকম :
“অনুমাধব, অনুমাধব তোমার বাড়ি যাব
এই গরমে একগ্লাস জল, গুড় বাতাসা পাব?
অনুমাধব হাসপাতালে তোমার বুকে ব্যথা
অক্সিজেনে টান পড়েছে, কুঁকড়ে গেছ নেতা
আমি যখন নবম শ্রেণি, আমি তখন শাড়ি
তখন তোমার হয়নি এমন এত্ত বড় ভুঁড়ি
রামপুরহাটের মাছ বাজারে ছিল প্রথম দেখা
অনুমাধব তুমি জানো, ছিলাম কত ন্যাকা
আমি এখন নিজাম প্যালেস, এখন সিবিআই
অনুমাধব আজও আমি… শুধু তোমায় চাই…”
এরপর পাল্টা প্যারোডি বেঁধে সেলিব্রিটি বিজেপি নেতাকে জবাব দিলেন তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু। ছত্রে ছত্রে ধরা পড়েছে শ্লেষ। প্রসঙ্গত, রুদ্রনীল ঘোষ রাজনৈতিক জীবনে অনেকবার শিবির বদল করেছেন। বামপন্থী সমর্থক অভিনেতা একসময়ে তৃণমূল রাজ্যস্তরের সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে নির্বাচনী সমীকরণ বুঝে রুদ্রনীল শাসক শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে ঢুকে পড়েন গেরুয়া শিবিরে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুরের প্রার্থীও হয়েছিলেন তিনি।
রুদ্রনীলের সেই দলবদল নিয়ে দেবাংশুর ছড়া, “আজকে তুমি আলিমুদ্দিন, কালকে কালীঘাট/ কবে আবার চুকিয়ে দেবে মুরলীধরের পাঠ/ ডেস্কে বসে হিসেব করো, বিরাট তোমার ঘর/রং বদলে ঠিক কতটা বদলে যাবে স্বর।” একদা বামপন্থী রুদ্রনীলকে তৃণমূল যুবনেতার খোঁচা, “মার্ক্স, লেনিন, স্ট্যালিন মিশে শিরায় শিরায় ইনকিলাব/ গালের গোড়ায় হালকা দাড়ি – ভুরুর নিচে বিজ্ঞ ভাব/ আজকে দাদুর দাড়ির মাঝে খুঁজেছো কাশবন / রামের তরে ভাসিয়ে দিলে ইনকিলাবি মন?” ৫ মিনিটের বেশি আবৃত্তির শেষাংশ আরও আক্রমণাত্মক। তাতে বলা হচ্ছে – “আজ নাথুরাম, কাল কী হবে?/ কালের ঘরে শনি/ রাজ্যে আরও কয়েক দশক কেবল দিদিমণি/ সব তো হল! আর কী বাকি? এবার যাবে কই?/ এবার কি তবে, লালুর দলের কনট্র্যাক্টে সই?”