নতুন পালক ‘রূপশ্রী’র মুকুটে। এই প্রকল্পে চার বছরে বীরভূম জেলায় ৫০ হাজারের বেশি যুবতীকে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা অর্থ সাহায্য দিল রাজ্য সরকার। আবেদন ক্রমশ বাড়ছে। রাজ্য সরকারের এই প্রকল্প জেলার দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৮।সালের এপ্রিল মাসে রাজ্য সরকার রূপশ্রী প্রকল্প শুরু করে। গতবছর ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত জেলা প্রশাসনের কাছে ৫৩ হাজার ৮৪৯ জন আবেদন করেছেন। এই প্রকল্পে মেয়েদের ১৮বছর বয়স হলে বিয়ের জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা এককালীন আর্থিক সাহায্য দেওয়া হয় পরিবারকে। জেলা প্রশাসনের কাছে জমা পড়া আবেদনের মধ্যে ৫২ হাজার ৮৯৬ জন আবেদন খতিয়ে দেখার পর মোট ৫০ হাজার ১৪জনের আবেদন অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসন। আবেদনকারীদের মধ্যে বেশকিছু আবেদন বাতিলও করেছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই অনুমোদন হওয়া আবেদনের মধ্যে ৪৯ হাজার ৭০৫ জন আবেদনকারী যুবতীকে রাজ্য সরকারের এই অর্থসাহায্য দেওয়া হয়েছে। যার জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে ১২৪ কোটি ২৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। অনুমোদন হওয়া বাকি ৩০৯ জনের টাকাও দ্রুত তাঁদের দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। যার জন্য খরচ হবে আরও ৭ কোটি ৭২ লক্ষ ৫০০০ টাকা।
পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের দাবি, রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য জেলাজুড়ে বাল্যবিবাহ অনেকটাই নিম্নমুখী হয়েছে। বেশকিছু ক্ষেত্রে কোথাও বাল্যবিবাহের খবর পেলে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তা বন্ধ করে রাজ্য সরকারের এই দু’টি প্রকল্পের মাধ্যমে সেই দুঃস্থ পরিবারের পাশে দাঁড়াচ্ছে প্রশাসন। একজন ছাত্রী স্কুলে পড়ার সময় কন্যাশ্রীর কে-১ ও কে-২ প্রকল্পের মাধ্যমে পড়াশোনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা পান। পরে ১৮ বছর বয়স হলে বিয়ের জন্য রাজ্য সরকার রূপশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে বিয়ের খরচ বাবদ ২৫হাজার টাকা এককালীন দিয়ে সহায়তা করছে। তাই এই সরকারি সুবিধা হাতে পাওয়ার পর দরিদ্র পরিবারের ছাত্রীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়েছে বলে মনে করছে প্রশাসন। সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত রূপশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামবাংলার দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়ের চিন্তা অনেকটাই কমেছে। কমবয়সে মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার প্রবণতাও কমেছে।”