চূড়ান্ত ব্যর্থ নরেন্দ্র মোদীর সাধের গুজরাট মডেল? উঠছে প্রশ্ন। সিএজি-র রিপোর্টে অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত করছে। তাদের রাজ্য সম্পর্কিত রিপোর্ট বলছে, তথাকথিত ধনী রাজ্য গুজরাট ঋণের ফাঁদে পড়েছে। আগামী ৭ বছরের মধ্যে মোট ঋণের অন্তত ৬১ শতাংশ শোধ করতে হবে গুজরাটকে। সেটা না হলে অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নিজের রাজ্য। সিএজির রিপোর্ট বলছে, এই মুহূর্তে গুজরাটের ঋণের পরিমাণ ৩ লক্ষ ৮ হাজার কোটির কিছু বেশি। আগামী বছর দু’য়ের মধ্যে এই ঋণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে যেত। ২০১৬ থেকে ২০২১ পর্যন্ত গুজরাট সরকারের জিএসডিপি সংগ্রহ যেখানে বেড়েছে ৯.১৯ শতাংশ হারে, সেখানে ঋণ বেড়েছে ১১.৪৯ হারে। সিএজির রিপোর্ট বলছে, আগামী ৭ বছরে গুজরাট সরকারকে অন্তত ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকা শোধ করতেই হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, “একদিকে রাজস্ব ঘাটতি অন্যদিকে খরচের বহর। ঋণের ফাঁদ এড়াতে রাজ্য সরকারকে সুচিন্তিত পরিকল্পনা তৈরি করতে হবে।”
প্রসঙ্গত, সিএজি-র রিপোর্ট অনুযায়ী ১০ বছর পর গত অর্থবর্ষেই বড়সড় রাজস্ব ঘাটতির মুখে পড়েছে গুজরাট। এর পিছনে অবশ্য করোনার একটা বড় ভূমিকা আছে। যদিও সিএজির রিপোর্টে তার উল্লেখ নেই। গুজরাট সরকার বাজেটে দাবি করেছিল ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ১০ হাজার ৯৯৭ কোটি টাকা। কিন্তু ক্যাগের রিপোর্ট বলছে, সঠিকভাবে হিসাব করলে সেই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৩৩ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, গুজরাটের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিও বিরাট লোকসানের মধ্যে। রিপোর্টে বলা হচ্ছে, গুজরাটের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ৩০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা লোকসানের মুখ দেখেছে গত বছর। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার আওতায় রাস্তা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা এমনিতেই গুজরাট সরকার এক তৃতীয়াংশ করে দিয়েছিল। সেটার মধ্যেও মাত্র ৫৪ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্যাগের এই রিপোর্ট তথাকথিত গুজরাট মডেলের ফোঁপরা ও কঙ্কালসার চেহারা প্রকাশ্যে এনে দিয়েছে। গুজরাটে বিজেপি ক্ষমতায় আছে প্রায় ২৭ বছর। তার মধ্যে দীর্ঘদিন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সেই রাজ্যের এই দুর্দশা বিজেপির ভাবমূর্তিতে ধাক্কা দেবে নিঃসন্দেহে। তাছাড়া এবছরই গুজরাটের নির্বাচন। তাতেও এই রিপোর্টের প্রভাব পড়তে পারে।