সেই ২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন যে ব্যক্তি, এবার তাঁর নামেই নোটিস পাঠিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইল ফরেনার্স ট্রাইবুনাল! হ্যাঁ, এমনই হাস্যকর কাণ্ড ঘটল আসামের কাছাড় জেলায়। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় স্তম্ভিত উধারবন্দের শ্যামাচরণ দাসের পরিজনেরা৷ যদিও মৃত শ্যামাচরণের কন্যা বেবি দাস জানিয়েছেন, আইনে আপত্তি না থাকলে তাঁরা প্রয়াতের প্রতিনিধি হিসাবে এই মামলা লড়তে চান৷
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে মারা গিয়েছেন শ্যামাচরণ৷ ফরেনার্স ট্রাইবুনালও সে সম্পর্কে অবগত৷ কারণ ওই একই ট্রাইবুনালে আগে থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছিল৷ তাঁকে তখন সন্দেহভাজন ভোটার বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল৷ প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুবিধে থেকে বঞ্চিত গোটা পরিবার৷ মৃত্যুর পরে ট্রাইবুনাল মামলাটি খারিজ করে দেয়৷ তৎকালীন বিচারক রায় দিয়েছিলেন, প্রদত্ত নথিপত্রে অভিযুক্তের মৃত্যুর প্রমাণ মিলেছে৷ ফলে এই মামলা চালানোর আর যুক্তি থাকতে পারে না৷
কিন্তু ছ’বছর পরে আচমকাই ওই একই ট্রাইবুনালের বর্তমান সদস্য শ্যামাচরণের বাড়িতে নোটিস পাঠিয়েছেন৷ আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে তাঁকে ট্রাইবুনালে গিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে বলা হয়েছে৷ এ নিয়ে তাঁর বিধবা স্ত্রী সুলেখা দাস বলেন, ‘অসহায়ত্বটা আরও বেড়ে গেল৷’ তিনি জানান, তাঁকেও পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে নোটিস পাঠিয়েছিল৷ একতরফা রায়ে ট্রাইবুনাল তাঁকে বিদেশি বলে ঘোষণা করে৷ পরে পুলিশ এক দিন বাড়ি থেকে তাকে তুলে এনে শিলচর সেন্ট্রাল জেলে পুরে দেয়৷
তবে করোনার দরুন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দেড় বছর ধরে অবশ্য জামিনে মুক্ত সুলেখা৷ তাঁর কন্যা বেবি দাস বলেন, ‘মায়ের মামলায় একতরফা রায়ে বিদেশি ঘোষণার বিরুদ্ধে যখন লড়াই চলছে, তখন মৃত বাবার নামে নোটিস আমাদের যন্ত্রণা বাড়িয়ে দিল৷ তবে এই নোটিস নিয়েই আমরা ট্রাইবুনালে হাজির হব৷’ তাঁর কথায়, শ্যামাচরণ ও সুলেখা দু’জনেরই ভারতীয় নাগরিকত্বের পর্যাপ্ত নথি রয়েছে৷ ১৯৬৫ ও ১৯৭০ সালের ভোটার তাঁরা৷ কিন্তু সে সব দেখানোর সুযোগই মেলেনি৷