রাজ্য সরকার স্কুল পড়ুয়াদের পোশাক নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। রাজ্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের সব সরকারী স্কুল ও সরকার পোষিত স্কুলের পড়ুয়াদের পোশাকের রঙ হবে সাদা-নীল। সেই সঙ্গে সেই পোষাকে থাকবে বিশ্ববাংলার লোগোও। এ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রাজ্য নিজের ইচ্ছা স্কুলগুলির উপর চাপিয়ে দিয়ে স্কুলের স্বাধীনতা উপর হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা। তবে মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানিয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, গোটা ঘটনা ঘিরে অহেতুক বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। বিশ্ববাংলা লোগো সরকারের প্রতীক। এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়।
মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভায় শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের প্রশ্নের উত্তরে রাজ্য সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘এটা কোনও চাপিয়ে দেওয়া বিষয় নয়। বিশ্ব বাংলা লোগো কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির সম্পত্তি নয়। এটা সরকারের প্রতীক। বাংলাকে বিশ্বস্তরে উন্নীত করার একটা লক্ষ্য। আসাম, গুজরাত এমনকী উত্তরপ্রদেশেও নির্দিষ্ট স্কুল ড্রেস করা হয়েছে। সেখানে খাকি প্যান্ট করা হয়েছে। যা আমাদের সংঘের পোশাক স্মরণ করায়। কিন্তু আমাদের এখানে বিষয়টা বঙ্গ অস্মিতার। বিষয়টিকে সংকীর্ণ রাজনৈতিক গণ্ডির মধ্যে দেখবেন না। বঙ্গ অস্মিতা হিসেবে দেখুন।’
মন্ত্রীর দাবি, ২০১৯ সালের ৬ মার্চ বিজেপি শাসিত আসামে স্কুল পড়ুয়াদের পোশাকবিধি সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বলা হয় প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম হবে গাঢ় নীল প্যান্ট বা স্কার্ট, সঙ্গে ছাই রঙের শার্ট। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়ারা গাঢ় নীল প্যান্ট ও স্কার্টের সঙ্গে সাদা রঙের শার্ট পরবে। আবার ২০২১ সালের ৩০ জুন গুজরাতে ১৪ লক্ষ অঙ্গনওয়াড়ি বাচ্চাদের যে ইউনিফর্ম দেওয়া হয় সেখানে ছিল খাকি রঙের প্যান্ট অথবা স্কার্ট। সঙ্গে বেইজ কালারের শার্ট। আর গত বছর ৬ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার ঘোষণা করে ইউপি স্কুল ড্রেস যোজনায় নতুন ইউনিফর্মের রঙ হবে খয়েরি হাফ প্যান্ট অথবা স্কার্ট সঙ্গে লাল শার্ট। দেশের ৩ বিজেপি শাসিত রাজ্য যদি পোশাক বিধি লাগু করতে পারে তাহলে বাংলায় অসুবিধা কোথায়? ব্রাত্যর সাফ কথা, যারা বাংলায় বসে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন তাঁদের বলব দেশের অনান্য রাজ্যগুলির দিকে তাকিয়ে দেখতে।