যথার্থ সময়ের আগে শিশুর জন্মের ঘটনা ইদানীং বেশ বাড়ছে। সেই সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিজ্ঞান ও প্রযু্ক্তিক অগ্রগতি। তাই সময়ের আগে শিশুর জন্ম মানেই এখন চরম কোনও বিপদ নয়। তাকে সুস্থ করে বাঁচিয়ে তোলার নজির প্রায়ই রাখছেন ডাক্তারবাবুরা।
বেশ জটিলতা পার করে ডাক্তারবাবুদের দক্ষতায় এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন রিনাদেবী। সদ্যোজাতর ওজন ছিল মাত্র ৭১৫ গ্রাম। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই কম ওজনের এই শিশুটিকে এসএনসিইউতে ভর্তি করা হয়, চিকিৎসা শুরু হয়। এর পরে শরীরের অবনতি হয়ে শিশুটির ওজন ৫৫০ গ্রামে চলে আসে। কার্যত বাঁচার সম্ভাবনাই ছিল না। কিন্তু হাল ছাড়েননি চিকিৎসক ও নার্সরা।
তাঁদের অক্লান্ত চেষ্টায় ও চিকিৎসায় তিন মাস ২৬ দিনে শিশুটির ওজন বেড়ে হয় এক কিলো ৬৪০ গ্রাম। এর পরে, সোমবার শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
হাসপাতালের সুপার অরূপরতন করণ জানান, এত কম ওজনের প্রিম্যাচিওর্ড শিশুটিকে নিয়ে চিন্তায় ছিলেন সকলে। চিকিৎসক-নার্সদের চেষ্টায় তাকে সুস্থ করে তোলা গিয়েছে। নার্স সুভদ্রা দাস জানিয়েছেন, এত ছোট শিশু দেখে সকলে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তাকে বাঁচানো রীতিমতো চ্যালেঞ্জ ছিল। সকলের চেষ্টায় আজ শিশুটিকে সুস্থ করে তোলা গেছে, পরিবারের সঙ্গে বাড়ি গেছে সে।
কালনা হাসপাতালের চিকিৎসকরা এমনই এক মিরাকেল ঘটিয়ে ফেলেছেন। ২৬ সপ্তাহের মাথায় জন্ম নেওয়া এই শিশুকন্যাকে তিন মাস ২৬ দিন এসএনসিইউতে রেখে সুস্থ করে তুলেছেন তাঁরা। গতকাল, সোমবার তাকে নিয়ে বাড়ি গেলেন মা রিনা মণ্ডল।
শিশুটিকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে একটি নতুন জামা ও একটি মেহগনি গাছ উপহার দেওয়া হয়েছে। খুশি যেন বাঁধ মানছে না রিনা এবং তাঁর পরিবারের। হাসপাতালের সুপার অরূপরতন করণের কাছে বারবার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তাঁরা। চিকিৎসক অমিত হালদার, নার্স তারা দে-কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন আন্তরিক ভাবে।
জানা গেছে, গত বছর ১৮ নভেম্বর কালনার নান্দাই দুপসা গ্রামের বাসিন্দা রিনা কালনা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন ২৬ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায়। তিনি শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ ছিলেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে দ্রুত প্রসব করাতে হবে বলে সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।