২০২১ সালে যাবতীয় জল্পনাকে মিথ্যে প্রমাণিত করে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয় পেয়েছিল তৃণমূল। ভোটে জিতেই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছিলেন ‘এবার লক্ষ্য দিল্লি’। দল নেত্রীর নির্দেশ মত একের পর এক রাজ্য সংগঠন বিস্তার করতে শুরু করে তৃণমূল। ভিন রাজ্যে সংগঠন বিস্তারের গুরু দায়িত্ব তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছিল। অভিষেকের নির্দেশেই পড়শি বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরা, পশ্চিমের গোয়াতে সংগঠন বিস্তার শুরু করে তৃণমূল। ত্রিপুরার পুর নির্বাচনে ৩ মাসের মধ্য ভোট শতাংশ অনেকটাই বাড়িয়ে নিয়েছিল তৃণমূল। প্রথম থেকেই উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলিকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে তৃণমূল। পাহাড়ি রাজ্য মেঘালয় থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমার নেতৃত্বে প্রায় ১২ জন কংগ্রেস বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। এবার উত্তর পূর্বের এই দুই রাজ্য সংগঠনকে আরও মজবুত করতে সোমবার দলের তিন নেতাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
দলের থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে দলের সিনিয়র নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী মানস ভুঁইঞাকে অবিলম্বে মেঘালয়ে দলের ইনচার্জ হিসেবে নিয়োগ করা হচ্ছে। সদ্য বিধাননগরের পুর নিগমের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া সব্যসাচী দত্তকেও মানসের সঙ্গে মেঘালয় তৃণমূলের কো-ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেছিলেন সব্যসাচী। ২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের পর আবার তিনি পুরানো দলে ফিরে আসেন।
আরও এক বিজেপি থেকে দলে ফিরে আসা নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরাতে দলের ইনচার্জের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে গিয়েছিলেন রাজীব। বিজেপির টিকিটে ডোমজুড় থেতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিপুল ভোটে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে ত্রিপুরাতেই পুনরায় তৃণমূল ফিরে আসেন রাজীব। প্রত্যাবর্তনের পর থেকে দলের নির্দেশে তাঁকে ত্রিপুরাতে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা গিয়েছে। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ত্রিপুরার দায়িত্ব পেলেন। এখন পশ্চিমবঙ্গের নেতাদের ওপর অন্য রাজ্যের দল পরিচালনা ও সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়ার পর আদৌ তৃণমূল সাফল্য পায় কিনা সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।