সম্প্রতি সাইবার ক্রাইমের দৌরাত্ম বেড়েছে। কিন্তু, সাইবার ক্রাইমকে শক্ত হাতে দমন করতে এগিয়ে বাংলা। স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটি সম্প্রতি সংসদে সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করেন। সেই প্রতিবেদনে সারা দেশের সাইবার-ক্রাইম ইউনিটের দুর্বল অবকাঠামো তুলে ধরেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গোয়া, আসাম, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের মতো বেশ কয়েকটি রাজ্যে একটিও সাইবার ক্রাইম সেল নেই। বেশ কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যেও সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য কোনও পরিকাঠামো নেই।
অন্যদিকে সাইবার ক্রাইম রুখতে বাংলা ‘ডবল-ইঞ্জিন’ রাজ্যগুলির থেকে অনেক এগিয়ে। রাজ্য জুড়ে মোট ৩৩ টি সাইবার ক্রাইম ইউনিট রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার প্রতিটি জেলায় এখন সাইবার ক্রাইম সেল রয়েছে। প্রথম থেকেই বাংলা সাইবার ক্রাইম রুখতে তৎপর। ২০১৮ সাল থেকে সাইবার ক্রাইমকে শক্ত হাতে দমনের জন্য আরও বেশি তৎপর হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। নতুন করে আরও বেশি পদক্ষেপ নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তখন থেকেই সাইবার ক্রাইমের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য় সরকার। রাজ্য পুলিশ বিভাগ এমনকি সেইসব জেলাগুলি খুঁজে বের করার জন্য একটি সমীক্ষা চালিয়েছে যেখানে বেশিরভাগ সাইবার-ক্রাইমের রিপোর্ট করা হয়েছে। একদল পুলিশ সদস্যকেও এ ধরনের অপরাধ পরিচালনার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
কলকাতা পুলিশ সাইবার ক্রাইম সম্পর্কে বয়স্ক নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতাও বাড়িয়েছে এবং এর জন্য একটি নির্দিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর চালু করেছে। এই নম্বরে নাগরিকরা সাইবার ক্রাইমের শিকার হলে তাৎক্ষণিক সাহায্য চাইতে পারেন।
সংসদে পেশ করা এই প্রতিবেদনে সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে বাংলাকে অনুসরণ করার কথা বলা হয়েছে অন্যান্য রাজ্যকে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশে সাইবার-ক্রাইম নিবন্ধিত মামলা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থায়ী কমিটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে সুপারিশের একটি সেটও করেছে, যা অন্যান্য রাজ্যকে পশ্চিমবঙ্গের উদাহরণ অনুসরণ করতে এবং জেলাভিত্তিক সাইবার সেল স্থাপন করতে বলে।
তদুপরি, স্থায়ী কমিটি বিদ্যমান সাইবার সেলগুলিকে ডার্ক ওয়েব মনিটরিং সেলগুলিতে মানোন্নয়ন করতে বলেছে। কমিটি আরও প্রস্তাব করেছে যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে সাইবার-ক্রাইমের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং পেশাদার তথ্য প্রযুক্তিবিদ নিয়োগ করতে উৎসাহিত করেছে।