রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে রাশিয়া ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দেওয়ার পরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে মস্কো। গত বৃহস্পতিবার থেকেই ইউক্রেনের মাটিতে রাশিয়ার মিলিটারি অপারেশন চলছে। সপ্তাহ খানেক পেরিয়ে গেলেও যুদ্ধ পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। একের পর এক শহরের দখল নিচ্ছে রাশিয়া। এ হেন পরিস্থিতিতে এক অন্য লড়াই লড়ছেন তিনি। রাজধানী কিয়েভে মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন কলকাতার পৃথ্বীরাজ ঘোষ, এখনও! এই বাঙালি চিকিৎসক বলছেন, ‘এত বছর ধরে এখানে আছি। এখন ছেড়ে গেলে ভালো লাগবে না। আপাতত কিছু দায়িত্ব আছে। সেগুলি ছেড়ে যাওয়া উচিত নয়’! ছেলের কাজে গর্বিত বাবা-মা। কিন্তু কলকাতায় বসে উৎকণ্ঠাও যে বাড়ছে বৃদ্ধ দম্পতির।
চারিদিকে গোলা-গুলি শব্দ। প্রাণ বাঁচাতে হস্টেল ছেড়ে বাঙ্কারে আশ্রয় নিয়েছেন ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের পড়ুয়ারা। জল নেই, খাবার নেই। এমনকী, বাঙ্কারে কমছে অক্সিজেনের সরবরাহও! তাহলে কোন দায়িত্বের পালনের জন্য ইউক্রেনে রয়ে গিয়েছেন? কেন ফিরতে চাইছেন না? স্রেফ ভারতীয়রাই নন, বিভিন্ন দেশের তিনশোর বেশির পড়ুয়াকে এখনও পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন পৃথ্বীরাজ। সংবাদ মাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, ‘এখনও কিয়েভ ছাড়িনি। কিয়েভের সমস্ত পড়ুয়ারা চলে গিয়েছেন। গতকাল রাতে খবর পেয়েছিলাম, সোমি শহরে কিছু পড়ুয়া আটকে রয়েছে। আজ সকালে খবর পেলাম, হারকাভেও প্রায় ২ হাজার পড়ুয়া আটকে। সবাইকে সাহায্য করে আমি হয়তো ফিরে যাব’। বললেন, ‘পড়ুয়াদের জন্য় মোটামুটি চাল-ডাল কিনে রেখেছিলাম। এরপর যখন যুদ্ধ শুরু হল, তখন সবাই এটিএম থেকে টাকা তুলতে শুরু করল। এখন সুযোগ পেলেই, ১০-১৫ দিন, এমনকী, ১ মাসের জন্য জিনিস কিনে রাখতে শুরু করেছে সকলে। কারণ, তাঁরা জানে না, যুদ্ধ কতদিন চলবে। ফলে বাজারে কিছু নেই’।