ইউক্রেন থেকে পালিয়ে আসা বেশ কিছু ভারতীয় ছাত্র অভিযোগ করেছেন যে পোল্যান্ড সীমান্তে ইউক্রেনিয়ান রক্ষীরা তাদের হয়রানি করেছে। এমনকি ভারতীয় পড়ুয়াদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি অনেক পড়ুয়ার অভিযোগ, তাদের সীমান্ত পার হতে দেওয়া হয়নি। উল্লেখ্য, ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ হওয়ায় সেদেশে বসবাসরত ভারতীয়দের সীমান্ত পার করে পার্শ্ববর্তী দেশে যেতে বলা হয়েছে। হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, পোল্যান্ডের মতো দেশ থেকে ভারতীয়দের উদ্ধার করা হচ্ছে। অপারেশন গঙ্গা নামক একটি অভিযান চালানো হচ্ছে। তবে এর মধ্যে ইউক্রেন সীমান্তে ভারতীয়দের এই দৃশ্য চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এই নিয়ে টুইট করেছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী।
সম্প্রতিই সামনে এসেছে এমনই একটি ভিডিও, যেখানে দেখা যাচ্ছে এক পড়ুয়া সুটকেস টেনে আনছেন। আচমকাই পিছন থেকে এক ইউক্রেনীয় সেনা এসে সুটকেসে লাখি মারেন। ওই পড়ুয়া ভারতীয়ই ছিলেন কিনা, সে সম্পর্কে জানা না গেলেও, ওই সীমান্তে আটকে থাকা বহু পড়ুয়াই অভিযোগ করেছেন যে ভারতীয়দের নিত্যদিন হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে। মানসী চৌধুরী নামক ইউক্রেনে আটকে থাকা এক পড়ুয়া বলেন, ‘প্রতিদিন পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। এরা আমাদের উপর অত্যাচার করছে। ভারতীয় পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। ইউক্রেনের সেনারা আমাদের সীমান্ত পার করে পোল্যান্ডে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। প্রত্যেকটি মহিলা পড়ুয়াকে হেনস্থা করা হচ্ছে, আমাদের চুল ধরে টানা হচ্ছে, রড দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। বেশকিছু মহিলার গুরুতর আঘাত, এমনকি হাত বা পা ভেঙেও গিয়েছে’।
ওই ছাত্রী আরও যোগ করে বলেন, ‘ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিরা আমাদের খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করছেন। কিন্তু ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীরা আমাদের পোল্যান্ডে যেতে দিচ্ছে না। গেলেই রড নিয়ে আক্রমণ করতে আসছে। গতকাল তো গুলিও চালিয়েছে’। মানসী জানান, তিনি তিনদিন ইউক্রেন-পোল্যান্ড সীমান্তে আটকে থাকার পরও দেশে ফিরতে পারেননি। তিনি জানান, গাড়ি করে হস্টেলেই ফিরে যাচ্ছেন। বিগত তিনদিন ধরে তাদের উপর পশুর মতো অত্যাচার করা হয়েছে। ইউক্রেনের সেনারা নিজেদের দেশের বাসিন্দাদের বিনা বাধায় সীমান্ত পার করতে দিলেও, বাকিদের বাধা দিচ্ছে। তিনি জানান, হস্টেলে ফিরেই ভারতে ফেরার জন্য তিনি বিকল্প কোনও রাস্তা খুঁজবেন। এবার রোমানিয়া বা হাঙ্গেরির সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করবেন। দীক্ষা পাণ্ডে নামক অপর এক পড়ুয়াও বিগত কয়েকদিনের অভিজ্ঞতাকে বিভীষিকাময় বলে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সীমান্তে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়ছেন, তাদের হেনস্থা করা হচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হচ্ছে। জানি না কেন এই ধরনের হিংসাত্নক রূপ ধরেছে সেনারা’।