শুরু হয়ে গিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত৷ আন্তর্জাতিক রাজনীতি শুধু নয়, পাল্লা দিয়ে কেঁপে উঠেছিল আন্তর্জাতিক বাজারও। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে সোনার দাম। ভাতের শেয়ার বাজারেও নামে ধস। কলকাতায় রেকর্ড বাড়ে সোনার বিক্রয়মূল্য৷
তবে শুধু সোনা কিংবা শেয়ার বাজার নয়– রাশিয়া-ইউক্রেন এই সংঘাতের ফলে বিপুল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভারত-ইউক্রেন লেনদেনও। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আন্তর্জাতিক বাজারে ভারত যে সকল দেশে নিজের প্রস্তুত করা সামগ্রী রফতানি করে থাকে– এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে ইউক্রেন তাদের মধ্যে বৃহত্তম।
কিছু পরিসংখ্যান দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ভারত এবং ইউক্রেনের মধ্যে বাণিজ্যের পরিসংখ্যান ২০২১-২২সালের এপ্রিল-ডিসেম্বর কোয়ার্টারে ২.৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এখানেই শেষ নয়, ২০১৮-১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে আন্তরাষ্ট্রীয় বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ২.৭৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে গিয়েছে। ভারতের যে সর্বজনীন যে আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য সেখানেও ইউক্রেনের জায়গা চিরকালই অত্যন্ত শক্তিশালী।
তবে এই বাণিজ্য আপাতত খানিক সংকটের মুখে পড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। যে কোনও যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতেই দুটি দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্পর্কের উপর নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। স্বাধীনতার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গেও ভারতের আন্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক ভালো। যুদ্ধাস্ত্র আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে রাশিয়া ভারতের বড় ভরসা। সেই ভরসার জায়গা নষ্ট হোক এমনটাও ভারত চাইবে না।
এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে ইউক্রেনেই ভারত সবথেকে বেশি পরিমাণে পণ্য রফতানি করে থাকে। সারা বিশ্বের মধ্যে রফতানিকৃত দ্রব্যের নিরিখে ভারতের তালিকায় ইউক্রেন পঞ্চম। কৃষিজ দ্রব্য, পলিমার, প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যাদি ভারত ইউক্রেনে রফতানি করে থাকে। যুদ্ধের ফলে এই বিপুল পরিমাণ দ্রব্য রফতানি বন্ধ হয়ে গেলে বিপুল মুশকিলে পড়বে ভারত এমনটাই মনে করা হচ্ছে৷ এমনিতেই দেশে মুদ্রাস্ফীতির কালো মেঘ ঘনিয়ে আসছে। তার মধ্যে এই বাণিজ্য বন্ধ হলে ভারতের অর্থনীতিতে আরও বড় প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা।