সোমবার রুশপন্থী বিদ্রোহীদের দখলে থাকা ডোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে ‘স্বাধীন’ রাষ্ট্রের মর্যাদা দিয়েছে রাশিয়া। আর তারপরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী। অবশেষে সমস্ত আশঙ্কাকে সত্যি করে বৃহস্পতিবার যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে দিয়েছে মস্কো। গতকাল সকালেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা করেন যে রাশিয়ার তরফে ইউক্রেনে মিলিটারি অপারেশন চালানো হবে। আর তারপর থেকেই ইউক্রেনের মাটিতে একের পর এক গুলি-বোমা বর্ষণ চলছে। এর জেরে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় আটকে পড়েছেন সেই দেশে। যার মধ্যে রয়েছেন দুর্গাপুরের দুই মেডিক্যাল পড়ুয়া যমজ বোনও। মেডিক্যাল কলেজের বেসমেন্টের আপাতত ‘নিরাপদ’ আশ্রয়ই এখন দুই বোনের ঠিকানা। এদিকে, বাড়িতে চোখের পাতা এক করতে পারছেন না বাবা-মা। প্রবল উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে তাঁদের। আটকে পড়া বাকিদের পাশাপাশি তাঁদের দুই মেয়েকেও উদ্ধারের চেষ্টা করুক সরকার, কাতর আর্জি পরিবারের।
দুর্গাপুরের কোকওভেন থানার রাতুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ঝুমকি ও রুমকি গঙ্গোপাধ্যায়। ইউক্রেনের খারকিব ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন তাঁরা। গত ডিসেম্বরেই তাঁরা ইউক্রেনে গিয়েছেন। সেখান থেকে এমবিবিএস পাশ করে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন দুই বোনের। কিন্তু রাশিয়ার আগ্রাসন তাঁদের সেই স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইউক্রেনে বাকি অনেকের মতোই এখন প্রাণভয়ে রয়েছেন দুর্গাপুরের এই দুই তরুণীও। বর্তমানে ইউনিভার্সিটির বেসমেন্টে কোনওমতে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। শুক্রবার সকালেই দুই বোনের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল পরিবারের। তবে বেশিক্ষণ কথা বলা যায়নি। জল নেই, আলো নেই, শীতের পোশাকও নেই, টাকা শেষ- ফোনে বাড়ির লোকেদের জানিয়েছেন দুই বোন। এতেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ গঙ্গোপাধ্যায় পরিবারে। মেয়েদের চিন্তায় অস্থির বাবা-মা। সরকারের কাছে তাই মেয়েদের ফেরাতে ব্যবস্থা করার কাতর আবেদন রুমকি-ঝুমকির মা-বাবার।