বাজারে এলআইসি’র মতো ব্যাপক সংস্থার আইপিও আনাটা কখনই নিশ্চিন্ত হওয়ার মতো নয়। বরাবরই তা ঝুঁকিপূর্ণ। যেখানে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ছে যুদ্ধের আবহ। ইউক্রেন এবং রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ-পরিস্থিতি চলাকালীন যে কোনও সময় ইউরোপের বাজার ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার প্রভাব পড়তে পারে দালাল স্ট্রিটেও। এই পরিস্থিতিতে এলআইসি’র শেয়ার বাজারে এলেও বিনিয়োগকারীরা তাতে টাকা ঢালার ঝুঁকি নেবেন কিনা, তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বাজার বিশেষজ্ঞরা। ঝুঁকি যে রয়েছে, তা মানছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণও। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজারে এলআইসি’র আইপিও কেন্দ্র বাজারে আনবেই, বলছেন অর্থমন্ত্রী। মঙ্গলবার মুম্বইয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন,”বাজারে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে। মানুষ এলআইসির শেয়ার নিয়ে আগ্রহ আছে মানুষের মধ্যে। তাই আমরা এর মধ্যেই বিমা সংস্থার আইপিও বাজারে আনার সিদ্ধান্তে স্থির থাকছি।” যদিও পরক্ষণেই বাজারে ঝুঁকির ব্যাপারটি মেনে নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। পরক্ষণেই তাঁর সংযোগ, “এর মধ্যে অবশ্য বাজারের পরিস্থিতি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।”
স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, সত্যিই যদি উদ্বেগ থেকে থাকে তাহলে দেশের ইতিহাসের সর্ববৃহৎ আইপিও আনার কথা কেন ভাবছে সরকার? সে প্রশ্নের যদিও উত্তর নেই। সূত্রের খবর, আগামী ১১ই মার্চ বাজারে আসতে পারে দেশের সর্ববৃহৎ বিমা সংস্থার আইপিও। তবে প্রথম দু’দিন শুধু বড় মাপের বিনিয়োগকারী বা অ্যাঙ্কর ইনভেস্টরদের আইপিও খোলা হবে। অন্তত তিনটি সূত্র এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে এমনটাই জানিয়েছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, দু’দিন বাদে অর্থাৎ ১৩ বা ১৪ মার্চ থেকে সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও এলআইসির শেয়ার কিনতে পারবেন। প্রাথমিকভাবে খবর, এলআইসি আইপিও’র প্রস্তাবিত বাজার মূল্য হতে পারে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার বা ৬০ হাজার কোটি টাকা। যা বহু বিনিয়োগকারীর ভাগ্যের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। বাজার বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ মনে করছেন এত বড় অঙ্কের আইপিও এর আগে বাজারে আসেনি। ইতিমধ্যেই এলআইসির আইপিওর খসড়া প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দিয়েছেন সংস্থার আধিকারিকরা। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই সেবির কাছে অনুমোদনের জন্য জমা দেওয়া হবে সেই খসড়া। অনুমোদন পেলেই বাজারে পা রাখবে এলআইসির এই ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং।
