রবিবার, অর্থাৎ আজ সকালেই উত্তরপ্রদেশে শুরু হয়েছে তৃতীয় দফার নির্বাচন। ভোট ৫৯টি আসনে। তার আগে প্রবল চাপে বিজেপি। আগামী ১০ই মার্চ পাঁচ রাজ্যের ভোটের ফলপ্রকাশের দিনে যে কেন্দ্রের দিকে বিশেষভাবে তাকিয়ে থাকবে গোটা দেশ, সেই হাথরসে যেন ভোটের আগেই ব্যাকফুটে নরেন্দ্র মোদীর দল। এমনকী ভয় পেয়ে বিদায়ী বিধায়ককেই টিকিট দেওয়া হয়নি। বহু দূরের আগ্রা শহর থেকে এমন একজনকে নিয়ে এসে হাথরসে প্রার্থী করা হয়েছে, যিনি এই প্রথম ভোটে লড়ছেন। এক বছর আগে এক দলিত কন্যার ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যার ক্ষোভের আঁচ যে তীব্র আঘাত হানবে সেই আশঙ্কা প্রবল। স্থানীয় বিজেপি বিধায়কের উপর দলিত ভোটারের ক্রোধও সহজবোধ্য। তাই মরিয়া প্রয়াস হিসেবে বাইরে থেকে মহিলা প্রার্থী আনা হয়েছে। আর তা নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বের মধ্যেই চরমে অন্তর্দ্বন্দ্ব। ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা কি সফল হবে আদৌ? আজ বিজেপির কাছে সবথেকে বড় পরীক্ষা সেটাই। হাতরাস অপেক্ষা করে রয়েছে ভোটযন্ত্রে দলিত কন্যার মর্মান্তিক পরিণতির মোক্ষম জবাব দিতে। প্রচারপর্বে তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে দলিত মহল।
বিগত ২০১৭ সালে এই ৫৯ আসনে মধ্যে ৪৯টিতে পদ্ম-প্রার্থীরা জয়ী হয়েছিল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং যোগী আদিত্যনাথ চরম দুশ্চিন্তায়। কারণ আজ যে এলাকায় নির্বাচন, সেই বুন্দেলখণ্ড থেকে অবধ অঞ্চলে ভোটের প্রধান চালিকাশক্তি, দলিত, কৃষক এবং মুসলিম। ২০১৯ সালের পর গোমতী দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এই তিনটি শ্রেণীই এবার চরম ক্ষুব্ধ বিজেপির উপর। সেই শঙ্কা কতটা চাপে ফেলছে বিজেপির ভোট ম্যানেজারদের? তার প্রমাণ, শনিবার দিনভর লখনউতে বসে দফায় দফায় স্ট্র্যাটেজি মিটিং করেছেন অমিত শাহ। দিল্লীর দীনদয়াল উপাধ্যায়ের পার্টি অফিস শৃন্য। ভোট ম্যানেজারদের নিয়ে সন্ধ্যায় শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিজে যাচাই করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আজ ভোটগ্রহণ কারহালেও, যেখানে প্রার্থী অখিলেশ যাদব। সমাজবাদী পার্টির এই গড় এবার কাকে পাঠাবে বিধানসভায়? জল্পনা তুঙ্গে। অন্যদিকে, পাঞ্জাবে বিজেপি এমনিতে চতুর্থ হওয়ার দৌড়ে। লড়াই তৃতীয় হওয়ার জন্য। কংগ্রেস বনাম অকালি দলের পাশাপাশি এবার বৃহৎ শক্তি আম আদমি পার্টি। শেষবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচার করলেন বটে নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তিনিও জানেন, এই রাজ্যে দলের পালে হাওয়া নেই। বিজেপি পাঞ্জাবে সবথেকে বড় ফাঁপরে পড়েছে একটিই কারণে। এই প্রথম প্রচারে তারা বলতে পারছে না যে, গত পাঁচ বছর কংগ্রেস সরকার ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের সঙ্গেই তো জোট করেছেন নরেন্দ্র মোদী। তার থেকেও বড় আশঙ্কা পাঞ্জাবের কৃষক ভোটব্যাঙ্ক। সুতরাং হাথরস থেকে ভাতিন্দা, আজ বিজেপির পথে ছড়িয়ে রয়েছে একের পর এক পাহাড়প্রমাণ বাধা।