এবার মোদী সরকারের দুই মন্ত্রকের মধ্যেই শুরু হল টানাপোড়েন ও মতবিরোধ। বাজেটে সাধারণ মানুষের উপর কোনও বোঝা চাপানো হয়নি বলে দাবি করলেও আদতে ঘুরপথে পেট্রল ও ডিজেলের দাম বাড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে মোদী সরকারের দুই মন্ত্রকের মধ্যেই মতান্তর চরমে। কার্যত মুখোমুখি সংঘাতে অর্থমন্ত্রক ও পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। এবার বাজেটে অমিশ্রিত (আনব্লেন্ডেড) পেট্রল ও ডিজেলের উপর চাপানো হয়েছে লিটার প্রতি ২ টাকা অতিরিক্ত সেস। অমিশ্রিত পেট্রোল ও ডিজেলের অর্থ হল, যে পেট্রোল ও ডিজেলের সঙ্গে ইথানল অথবা সমতুল্য কোনও উপকরণ মিশ্রিত করা হয়। অমিশ্রিত পেট্রোল সব রাজ্যে সরবরাহ করা না হলেও, ডিজেলের ক্ষেত্রে এর প্রভাব প্রায় দেশজোড়া। কারণ দেশের প্রায় সব প্রান্তে এই অমিশ্রিত ডিজেল যায়। সুতরাং লিটার প্রতি ২ টাকা করে সেস বৃদ্ধি করা হলে, আগামী পয়লা অক্টোবর থেকে ডিজেলের দাম নতুন করে বাড়বে।
প্রসঙ্গত, এমনিতেই আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ঊর্ধমুখী। পেট্রোপণ্য আকাশছোঁয়া হয়েছে আগেই। মোদী সরকার কেন্দ্রীয় শুল্ক কমানোয় কিছুটা দাম কমেছে। কিন্তু গত একমাসের বেশি সময় ধরে আবার আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দাম ঊর্ধমুখী। তা সত্ত্বেও ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম একই রাখা হয়েছে। বাড়ানো হচ্ছে না। কারণ একটাই। পাঁচ রাজ্যে ভোট চলছে। বিরোধীদের অভিযোগ, একবার ভোট শেষ হলেই তৎক্ষণাৎ দাম আবার বাড়বে অভ্যন্তরীণ বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারের এই দাম ওঠাপড়ার সঙ্গেই দেশে পেট্রপণ্যের দাম বৃদ্ধি হয় অথবা কমে। কিন্তু বাজেটের নতুন সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক দামের প্রভাব ছাড়াও অতিরিক্ত দাম বৃদ্ধির ব্যবস্থা করে রাখা হল। এ নিয়েই পেট্রোলিয়াম মন্ত্রকের আপত্তি। পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এই অতিরিক্ত সেসের বোঝা চাপানোর বিরোধী। কারণ, একবার যখন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, তখন যে কোনও পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায় চাপবে মন্ত্রকের উপরেই। দেশবাসীর ক্ষোভের আঁচ সহ্য করতে হবে এই মন্ত্রককে। এই কারণেই আবার সিদ্ধান্ত বদলের বিবেচনা করার আবেদন জানিয়েছে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক। যদিও সরকারিভাবে কোনও মন্তব্যই করেনি কোনও মন্ত্রক। কিন্তু যখন সংসদে অর্থবিল পাশ হবে, তখনই গৃহীত হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।