কর্ণাটকে হিজাব নিয়ে বিতর্ক চলছেই। একদিকে যখন হিজাব বিতর্কের জেরে আন্তর্জাতিক স্তরে আলোচনা শুরু হয়েছে তখন অন্যদিকে হিজাব পরার ‘অপরাধে’ পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে পারল না উদুপি এবং শিবমোগা জেলার দুজন ছাত্রী। জানা যাচ্ছে, প্রতিদিনের মতো এদিনও কর্ণাটকের এই দুই জেলায় হিজাব পড়া ছাত্রীদের স্কুলে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু স্কুল খোলার পরেই পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সেই পরীক্ষার ক্ষেত্রেও ছাত্রীদের হিজাব খোলার শর্ত দেওয়া হয়। এতে ওই দুই ছাত্রী রাজি হয়নি এবং প্রতিবাদস্বরূপ তাঁরা পরীক্ষা বয়কট করেছে বলে জানা গিয়েছে।
এখানেই শেষ নয় জানা যাচ্ছে, কর্ণাটকের প্রায় সব জেলাতেই ছড়িয়ে পড়েছে এই হিজাব বিতর্ক। এর মধ্যে সবথেকে বেশী গণ্ডগোল শুরু হয়েছে উদুপি এবং শিবমোগার এলাকায়। জানা যাচ্ছে এই দুই জেলার কোনও স্কুলেই হিজাব পড়া ছাত্রীদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, কোনও স্কুলে ঢুকতে দেওয়া হলেও তাঁদের আলাদা কক্ষে বসিয়ে রাখা হচ্ছে। তারা পড়াশোনা করার কোনও সুযোগই পাচ্ছে না। এমনকি অধিকাংশ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা হিজাব পরা ওই সমস্ত ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা। এই প্রসঙ্গে ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর অভিভাবক অভিযোগ করেছেন যে, সারাদিন হিজাব পরা ওই সমস্ত ছাত্রীদের আলাদা ঘরে বসিয়ে রাখা হয়। তাদের কোনও ক্লাস নেওয়া হয় না। এমনকি গত কয়েকদিন ধরে ওই সমস্ত ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার শুরু করেছেন শিক্ষক শিক্ষিকারা। তাদের ওপর অহেতুক চিৎকার করা হচ্ছে। এর আগে এমন আচরণ কখনও করেননি শিক্ষক শিক্ষিকারা।
এই প্রসঙ্গে এক ছাত্রীর অভিভাবকের প্রশ্ন, ‘আমাদের শিশুরা হিজাব পরতে চায় এবং তারা শিক্ষা চায়। হিন্দু শিক্ষার্থীরা সিঁদুর পরে, খ্রিস্টান শিক্ষার্থীরা জপমালা পরে, আমাদের ছেলেমেয়েরা হিজাব পরলে দোষ কি?’ অন্য একজন অভিভাবকের বক্তব্য, ‘আমার মেয়ে দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ক্লাসে হিজাব পরে আসছে। কোনওদিন কোনও সমস্যা হয়নি। কিন্তু সম্প্রতি তাকে সেটা খুলে প্রতিদিনের প্রার্থনায় অংশ নিতে বলা হয়েছিল। সে হিজাব না খোলায় তাকে স্থানীয় পুলিশ হুমকি দেয়। শেষে সে হিজাব খুলতে এক প্রকার বাধ্য হয়েছিল।