অব্যাহত সংশয় ও প্রশ্নের ঝড়। জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা অস্থিভস্ম আসলে কার? কেন তার ডিএনএ টেস্ট হচ্ছে না? তৃণমূলের তোলা এই প্রশ্নের উত্তরে কার্যত মুখে কুলুপ এঁটেছে মোদী সরকারের। স্রেফ বলা হল, “নেতাজীর অন্তর্ধান রহস্য উন্মোচনে ১৯৯৯ সালের ১৪মে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মনোজ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কমিশন তৈরি করা হয়েছিল। তার মধ্যে এই বিষয়টিও দেখতে বলা হয়েছিল।” বিস্ময় প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ জহর সরকার। কেন্দ্রের কাছে লিখিতভাবে নেতাজী অর্ন্তধান রহস্য নিয়ে জানতে চেয়েছিলেন তিনি। এই সংক্রান্ত ক্লাসিফায়েড ফাইল নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অবস্থানই বা কী, তার জবাবও চেয়েছিলেন। সংসদে যার লিখিত উত্তর দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ভি মুরলিধরন।
এবিষয়ে রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, চীন ও জাপানের কাছে নেতাজি সংক্রান্ত গোপন ফাইল এবং নথি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তাতে চীন এখনও জবাব দেয়নি। আমেরিকা জানিয়েছে, ১৯৪৫ সালের সময়কার কোনও নথি বা তথ্য তাদের মহাফেজখানায় ডিজিটাল অবস্থায় নেই। তাছাড়া ৩০ বছরের বেশি ঐতিহাসিক কোনও নথি তারা রাখেও না। তাই নেতাজি সংক্রান্ত যে সময়ের কথা বলা হচ্ছে, তা খুঁজতে প্রচুর গবেষণা করতে হবে। যা সম্ভব নয়। একইভাবে রাশিয়া জানিয়েছে, বারবার ভারতের আবেদন সত্ত্বেও নেতাজী সংক্রান্ত কোনও ফাইল তাদের আর্কাইভে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বাড়তি উদ্যোগ নিয়ে খোঁজার পরেও কিছু পাওয়া যায়নি। ব্রিটেন বলেছে, নেতাজি সংক্রান্ত ৬২টি ফাইল ব্রিটিশ লাইব্রেরি ও ন্যাশানাল আর্কাইভের ওয়েবসাইটে রয়েছে। জাপানের জবাব হল, জাপান সরকার নেতাজী সংক্রান্ত দু’টি গোপন ফাইল প্রকাশ্যে এনেছে। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত সরকারের হাতে তা তুলেও দেওয়া হয়েছে। এরপরেও যদি নেতাজী সংক্রান্ত কোনও গোপন ফাইল খুঁজে পাওয়া যায়, তাহলে বিচার বিবেচনা করেই তা ভারতকে দেওয়া হবে। মোদী সরকারের এই জবাবে অসন্তুষ্ট জহরবাবু। তাই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নাইডুর দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। ডিএনএ টেস্ট ইস্যুতে স্পষ্ট জবাবের পাশাপাশি ইন্ডিয়া গেট নেতাজীর মূর্তি গড়তে কত টাকা খরচ হবে, কবে তা বসবে এবং হলোগ্রামের মূর্তিই বা কেন উধাও হয়ে গিয়েছিল, তার লিখিত জবাবও চেয়েছেন সাংসদ।