তাঁকে ঘিরে ধরে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তুলেছিল গৈরিক উত্তরীয় পরা একদল যুবক। কিন্তু তাতে ভয় পেয়ে গুটিয়ে না গিয়ে পাল্টা ‘আল্লা হু আকবর’ স্লোগান তুলেছিলেন তিনি। এবার সেই মুসকান জানালেন, ‘আমি কিন্তু কাঁদিনি।’ তবে কর্ণাটকের বি.কম অনার্সের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বলেন, ‘সে দিন ওই ভিড়ের দিকে তাকিয়ে আমি আল্লা হু আকবর বলি। কারণ, আমি ভিতরে ভিতরে ভয় পেয়েছিলাম। আমি ভয় পেলে আল্লার নাম নিই। আল্লার নাম নিলে সাহস ফিরে পাই।’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মাণ্ড্য প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজের একটি ভিডিয়ো নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, হিজাব-বোরখা পরিহিত এক কলেজ ছাত্রীর দিকে তেড়ে যাচ্ছে গেরুয়া উত্তরীয় পরিহিত একদল যুবক, সঙ্গে ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি। সেখানে বিন্দুমাত্র ভয় না পেয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেখা গিয়েছিল একা এক ছাত্রীকে। তার পর থেকেই খবরের শীর্ষে কর্ণাটকের কলেজ পড়ুয়া মুসকান খান।
বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমকে মুসকান জানান, সে দিন তিনি আসাইনমেন্ট জমা দিতে কলেজে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে দরজা থেকেই আটকে দেওয়া হয়। বলা হয়, বোরখা-হিজাব খুলে কলেজে ঢুকতে হবে, নয়তো বাড়ি ফিরে যাও। সেই সময়ে ভিতরে ভিতরে ভয় পেলেও পিছপা হননি মুসকান। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাঁর কথায়, ‘ওই ভিড়ে যারা ছিল, তাদের মানবিকতা বলতে কিছু ছিল না। আমার পিছনে এসে এমন চিৎকার শুরু করে, বাধ্য হয়েই প্রতিবাদ করি।’
অন্যদিকে, মুসকানের বাবা মহম্মদ হুসেন খান জানান, ‘আমার মেয়ে বাহাদুর। ওর খুব সাহস। কোনও কিছুতে সহজে ওকে ভয় পাওয়ানো যায় না। তাই ওর এই কাজে আমি একটুও অবাক হইনি।’ যদিও ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশে লিখিত কোনও অভিযোগ করেননি তাঁরা। মুসকানের বাবার কথায়, ‘ওই ভিড়ে বেশির ভাগই বহিরাগত। কয়েক জন ছেলে মুসকানের সহপাঠী, ওই কলেজের ছাত্র। সামনেই পরীক্ষা শুরু হচ্ছে, থানা-পুলিশ করে আমি ওই ছাত্রদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করতে চাই না।’