বিদ্রোহের আগুন ধিকিধিকি জ্বলছিল উনিশের লোকসভার পর থেকেই। ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী পদ থেকে সুদীপ রায় বর্মনকে সরানোর পর ঠারেঠোর ৬ আগরতলার বিধায়ক বারবার বলতেন, ত্রিপুরা সরকার সঠিক ভাবে, যৌথ নেতৃত্বে চলছে না।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে বিপ্লব দেব সাংবাদিক বৈঠক করে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, আগরতলার আস্তাবল মাঠে গণভোট নেবেন। তারপর দরকারে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার ছেড়ে দেবেন। তারপর অবশ্য দলের চাপেই পিছু হঠতে হয় বিপ্লবকে। তবে সুদীপের বক্তব্য, ত্রিপুরার মানুষ ফুঁসছে। যেনতেন প্রকারেণ এই সরকারের থেকে মুক্তি চাইছে রাজ্যবাসী।
বিজেপিতে থাকা অবস্থায় বিপ্লবের বিরুদ্ধে তোপ দাগার বিষয়ে তবু একটু মেপেজুকে বললেও কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর যেন আগল খুলে দিলেন সুদীপ। ত্রিপুরা সরকার, বিজেপির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে দ্য ওয়ালকে সুদীপ বলেন, “গণতান্ত্রিক দেশে ত্রিপুরায় একনায়কতন্ত্র চলছে। কোনও মন্ত্রীর ক্ষমতা নেই। গুটি কয়েক অফিসারকে নিয়ে একজন সব করছেন।”
মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুদীপ বলেন, “বাঁদরের হাতে লাঠি ধরানো হলে যা হয় তাই হয়েছে।” আরও দুটি উপমা টানেন সুদীপ। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে সুদীপ রায় বর্মন বলেন, “ছাগল দিয়ে হাল চাষ হলে বলদ কেনার দরকার পড়ত না। এখন ত্রিপুরা দেখলে মনে হয় বাবা তোমার দরবারে সব পাগলের মেলা।”
পাল্টা বিপ্লব শিবিরের এক নেতা কটাক্ষের সুরে বলেন, “সুদীপ রায় বর্মন কাজের কাজ করেছেন। ত্রিপুরায় তাঁর আর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। তাই তিনি এমন একটি দলে যোগ দিয়েছেন যার ভবিষ্যৎও ঘুটঘুটে অন্ধকার।”
অনেকে বলেন, সুদীপ এবং তাঁর টিম চেয়েছিল বিজেপির রাজ্য সংগঠনের নিয়ন্ত্রণের জায়গায় যেতে। তা না হওয়াতেই সংঘাত তীব্র হয়। এর আগে ত্রিপুরার বিক্ষুব্ধ নেতারা দিল্লী গিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গেও দেখা করেন।