অবশেষে ধরা পড়ল দক্ষিণরায়। ছাগলের টোপ দেখিয়ে আয়ত্তে আনা গেল কুলতলির বাঘকে। স্বস্তিতে এলাকাবাসী। বুধবার কুলতলি ব্লকে দেউলবাড়ি- দেবীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পেটকুল চাঁদ ও সাবুর আলি কাটা এই দুই জায়গার মধ্যবর্তী ম্যানগ্রোভের বাদাবনে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পান এলাকাবাসী। এরপরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল এলাকাজুড়ে। আতঙ্কে সিঁটিয়ে ছিলেন এলাকাবাসী। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে।
এরপর বনদফতরের রায়দিঘি রেঞ্জের অন্তর্গত কুলতলি বিটের বনকর্মীরা বাঘের পায়ের ছাপ অনুসন্ধান করতে শুরু করে। কোনও ঝুকি না নিয়েই বাঘটিকে খাঁচাবন্দি করার পরিকল্পনা করেন বনদফতরের কর্মীরা। বনদফতরের এডিএফও অনুরাগ চৌধুরীও ঘটনাস্থলে পৌঁছন। যে এলাকায় বাঘটির থাকার সম্ভাবনা করা হচ্ছিল সেই অঞ্চলটিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়।
বুধবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির পেটকুলচাঁদ ব্রিজ এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পেয়েছিলেন মহিলা মৎস্যজীবী হারানি মণ্ডল। তিনি বলেছিলেন, “নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে চরের কাছে জঙ্গলের মুখে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে উপরে উঠে আসি এবং এলাকার সকলকে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে পাওয়ার কথা জানাই।” খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বনদফতরের কর্মীরা।
সন্ধ্যায় সেখানে পাতা হয় একটি লোহার খাঁচা। বাঘটিকে ধরতে দেওয়া হয় ছাগলের টোপ। আর তাতেই বাজিমাত। ভোর ৩টে নাগাদ সেই ছাগলের লোভেই খাঁচাবন্দি হয় দক্ষিণরায়। এরপরেই তার হুঙ্কার শুনতে পান গ্রামবাসী এবং বন দফতরের কর্মীরা।
তাঁরা গিয়ে দেখতে পান, খাঁচায় ধরা দিয়েছে দক্ষিণরায়। দ্রুত খাঁচা বন্দি বাঘটিকে নিয়ে বনদফতরের বোট রওনা দেয় সুন্দরবনের বনি ক্যাম্পের দিকে। সেখানে দক্ষিণরায়ের শারীরিক অবস্থার পরীক্ষা করা হবে। এরপর বনদফতরের শীর্ষ কর্তাদের নির্দেশ পাওয়ার পরেই জঙ্গলে ছেড়ে আসা হবে বাঘটিকে।
প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আজমলমারি ১ নম্বর জঙ্গল থেকেই বাঘটি কোনভাবে পেটকুলচাঁদ ও সাবুর আলি কাটা এলাকার দিকে চলে আসে। এলাকায় বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যেতেই আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। ভয়ে কাঁটা হয়েছিলেন এলাকাবাসী। কিন্তু, দক্ষিণরায় খাঁচাবন্দি হতেই কার্যত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন তাঁরা। সম্প্রতি ২৪ পরগনার একাধিক জেলাতে বাঘের প্রবেশকে ঘিরে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে। কেন জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে দক্ষিণরায়? তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞ মহলের একাংশ।