প্রায় সাড়ে তিন দশকের পর এবার কাঁথি পুরসভা হতে চলেছে ‘অধিকারী’হীন। অধিকারী পরিবারের কোনও প্রতিনিধিই থাকছেন না পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভার ভোটে। কাঁথি পুরসভার যে প্রার্থীতালিকা এবার বিজেপি ঘোষণা করেছে তাতে নেই ‘শান্তিকুঞ্জের’ কোনও সদস্যের নাম। অথচ শিশির, শুভেন্দু, দিব্যেন্দু, সৌমেন্দু গত সাড়ে তিন দশক ধরে ভিন্ন-ভিন্ন সময়ে কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান পদে বহাল ছিলেন। কিন্তু বিজেপি সেই অধিকারী পরিবারকে টিকিট না দেওয়ায় অন্যরকম গন্ধ পাচ্ছে রাজ্যের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না কুণাল ঘোষও। রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিজেপিতে ভবিষ্যত নেই শুভেন্দুর। তাই তিনি তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের কাউকে টিকিট না দিয়ে বিজেপিতে শুভেন্দুর গুরুত্ব কী তা বুঝিয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির।
এর আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করে কুণাল বলেছিলেন, ‘তৃণমূলে ফিরতে চাইছে শুভেন্দু। ওর সঙ্গে আরও যে দু একজন গেছিল তারাও ফিরতে চাইছে। কিন্তু ফিরতে চাইলেও ফেরানো হবে না ওদের কাউকেই।’ বুধবারও তিনি দাবি করেছেন, তাঁর কাছে সূত্র মারফত খবর আছে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলে ফিরতে চাইছেন। বিজেপিতে শুভেন্দু অধিকারীর দমবন্ধ হয়ে আসছে। তৃণমূল নেতার দাবি, রাজ্য সরকারের বিরোধিতা করতে শুভেন্দু বাধ্য হচ্ছেন, নইলে তাঁকে সিবিআই ও ইডির হাতে গ্রেফতার হতে হবে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাও তুলে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু তলে তলে তিনি তৃণমূলে ফেরার চেষ্টা করছেন। বিজেপির কোন্দল নিয়ে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও আক্রমণ করেন কুণাল। বলেন, বিজেপিতে সার্কাস চলছে।
তাঁর কথায়, ‘শুভেন্দু তৃণমূলে ফিরতে চান বলে আমাদের কাছে খবর। কারণ কাঁথিতে অধিকারী পরিবারের কাউকে টিকিট দেয়নি বিজেপি। এত নাকি ভাল কাজ করেছে। বিজেপিতে এখন দমবন্ধ হয়ে আসছে শুভেন্দুর। সৌমেন্দু অধিকারী টিকিট পেলেন না কেন? তৃণমূল অধিকারী পরিবারকে সব দিয়েছিল। এদিকে দরজায় ঠকঠক চলছে। শুভেন্দু রাজ্য সরকারকে যদি না আক্রমণ করে তাহলে তো ইডি, সিবিআই-এর মুখে পড়বে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা তুলে নেবে। তাই বলছেন এসব। অধিকারী পরিবারের ডানা ছেঁটেছে বিজেপি। দাঁড়ালেই তো হারত। যেভাবে পরিবারতন্ত্র চালিয়েছেন তৃণমূলে থাকতে। এখন ভেসেই থাকতে হবে।’ তৃণমূল মুখপাত্রের কথায়, ‘আদি বিজেপি চায় না অধিকারী পরিবারকে। কর্পোরেশনের প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা অধিকারী পরিবারের নেই। সেটা বিজেপির প্রার্থী তালিকা দেখেই বোঝা যাচ্ছে।’