আর মাত্র কয়েকদিন। তারপরই ভ্যালেন্টাইনস ডে। ভালবাসার পরবে মেতে উঠবে বাঙালি। আজ থেকেই শুরু হচ্ছে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহ। ৭ থেকে ১৪ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা রোজ ডে থেকে এই ভালবাসার সপ্তাহ শুরু হয়। অনুভূতি প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে গোলাপকে ব্যবহার করা হয়। রোজ শব্দটি, ল্যাটিন শব্দ রোসা থেকে এসেছে। গোলাপ হল ভালবাসা প্রকাশের প্রতীক। শোনা যায়, নূরজাহান লাল গোলাপ খুব পছন্দ করতেন। তাই নূরজাহানকে খুশি করার জন্য জাহাঙ্গীর প্রতিদিন প্রাসাদে গোলাপ পাঠাতেন। আরেকটি কিংবদন্তি জনশ্রুতি অনুসারে, রানি ভিক্টোরিয়ার সময়ে লোকেরা তাঁদের অনুভূতি প্রকাশের জন্য গোলাপ বিনিময়ের প্রথা শুরু করেছিল। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, ভিক্টোরিয়ান এবং রোমানরাও গোলাপ দিয়ে তাঁদের ভালবাসা প্রকাশ করতেন। এইভাবেই ইতিহাসে গোলাপ দেওয়া আর ভালবাসার প্রকাশ কার্যত সমর্থক হয়ে গিয়েছে। রোজ ডে-র দিন নানান রঙের গোলাপ দেওয়ার রীতি রয়েছে। প্রত্যেক রঙের গোলাপের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ভালোবাসার পৃথক পৃথক অনুভব।
উল্লেখ্য, বিগত ২০১৭ সাল থেকে দুটি অপূর্ব গোলাপ শোভা পাচ্ছে দিল্লীর মোঘল গার্ডেনে। প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রীর নামে দুটি গোলাপ চারার নামকরণ করা হয়েছে। ২০১৫ সালের বসন্তে ‘প্রেসিডেন্ট প্রণব’ ও ‘শুভ্রা মুখার্জি’ নামে ঐ গোলাপ গাছ দুটি রোপণ করা হয়। গোলাপ দুটোর রঙ হলুদ এবং পার্পেল পশ্চিমবঙ্গের পুষ্পাঞ্জলি নার্সারি থেকে সেই গাছ এসেছে রাষ্ট্রপতি ভবনে। প্রণব বাবুই একমাত্র রাষ্ট্রপতি, যাঁর নামে গোলাপ রয়েছে ঐ বাগানে। জওহরলাল নেহরু থেকে শুরু করে মাদার টেরেসা, এমন প্রায় ১৪০ জন বরেন্য মানুষের নামে মোঘল বাগানে গোলাপ রয়েছে। ভারতীয়দের মধ্যে গোলাপপ্রেম বহু প্রাচীন কাল থেকেই রয়েছে। আমাদের রবি ঠাকুরও ছিলেন আদ্যন্ত গোলাপপ্রেমী মানুষ। শান্তিনিকেতনের লাল জমিতে গোলাপবাগান তৈরি করেছিলেন তাঁর পুত্র রথীন্দ্রনাথ। রথীন্দ্রনাথের সেই দুঃসাধ্যসাধন দেখে প্রত্যক্ষদর্শী গোলাপপ্রেমী কবির সন্তুষ্ট উচ্চারণ ছিল — “রথী, আমি জীবনে কখনই ভাবতে পারিনি এখানে গোলাপ ফুল দেখব। তুমি অসম্ভবকে সম্ভব করেছ।”