হাতে আর বেশিদিন নেই। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে উত্তরপ্রদেশে শুরু বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি ঝালিয়ে নিচ্ছে সবকটি রাজনৈতিক দল। একইসঙ্গে চলছে বিরোধী পক্ষকে আক্রমণের পালাও। এই আবহে রাষ্ট্রীয় লোক দল প্রধান জয়ন্ত চৌধুরি সোমবার আক্রমণ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। জয়ন্ত চৌধুরির আরএলডি উত্তরপ্রদেশে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করেছে। সোমবার উত্তর প্রদেশের বিজনোরে যাওয়ার কথা ছিল প্রধানমন্ত্রীর। খারাপ আবহাওয়ার কারণে নরেন্দ্র মোদী উত্তর প্রদেশের বিজনোরে তাঁর সশরীরে প্রচার বাতিল করেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সপার জোটসঙ্গী আরএলডি এর জয়ন্ত চৌধুরি এদিন মোদীকে ব্যঙ্গ করেছেন। তিনি মোদীকে কটাক্ষ করে বলেছেন জনগণের প্রতিশ্রুতি রাখতে ব্যর্থ হওয়ার পর তাঁদের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত নয় বিজেপি।
মীরাট ক্যান্টনমেন্টের একটি জনসভায় রাষ্ট্রীয় লোক দলের প্রধান জয়ন্ত চৌধুরি বলেছেন, ‘বিজেপি এর আগে বিজনোরে আরও ভাল বিদ্যুৎ ও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে জনগণ তাঁকে প্রশ্ন করতেন। তাই হঠাৎ করেই বিজেপির আবহাওয়া খারাপ হয়ে গেল।’ এরপর অখিলেশের জোটসঙ্গী জয়ন্ত চৌধুরি উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে আক্রমণ করেন। সম্প্রতি যোগী আদিত্যনাথ একটি জনসভা থেকে বলেছেন যে তিনি অন্যান্য বিরোধী দলকে ঠান্ডা করে দেবেন। সেই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আজ জয়ন্ত চৌধুরি বলেছেন, “তাঁরা আমাদের ঠান্ডা করতে চায় কিন্তু এখানে অনেক উত্তাপ রয়েছে। তাঁরা জিন্নাকে নিয়ে কথা বলতে চায় কিন্তু আমরা চাকরি এবং আখের বকেয়া নিয়ে কথা বলতে চাই।’
বিজনোর এলাকা আখের চাষের জন্য বিখ্যাত। বিজনোরে ৮ টি বিধানসভা আসন রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি বিজেপির এবং বাকি তিনটি সমাজবাদী পার্টির দখলে রয়েছে। এই জেলার প্রায় ৫০ শতাংশ জনসংখ্যা দলিত এবং মুসলিম। এখানে দুটি লোকসভা আসন রয়েছে – বিজনোর এবং নাগিনা। এই দুটি লোকসভা আসনই বহুজন সমাজ পার্টির দখলে। বিজনোর জেলাটি পশ্চিম উত্তর প্রদেশের কাছাকাছি অবস্থিত। এই পশ্চিম উত্তর প্রদেশে জাঠ ও কৃষকদেরই আধিপত্য বেশি। জাঠরা বিজেপির ভোটব্যাঙ্ক ছিল। বিজেপি জাঠদের থেকে গত নির্বাচনে ভাল সমর্থন পেয়ে এসেছে। কিন্তু কেন্দ্রের তিন কৃষি আইন মেনে নিতে পারেনি বহু জাঠ সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁরা এক বছর ব্যপী কৃষক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং সমর্থন করেছিলেন। তাঁদের পাশে ছিলেন আরএলডি নেতা জয়ন্ত চৌধুরি। তাই এই বছরের নির্বাচনে পশ্চিম উত্তর প্রদেশে নির্বাচনের সমীকরণ ঘুরে যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।