প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেন ওয়ান নেশন, ওয়ান ইন্ডিয়া। কিন্তু তিনিই ভারতকে দু’ভাগে ভেঙে দিয়েছেন। একটা ভাগ ধনীদের, যাদের হাতে সবকিছু আছে। আরেকটা ভাগ গরিবের। সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি ভাষণে কেন্দ্র তথা প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাহুল গান্ধী। অভিযোগ করলেন, এই সরকারের আমলে দেশে ধনবৈষম্য বাড়ছে। গরিব আরও গরিব হচ্ছে। ধনী আরও ধনী হচ্ছে।
কংগ্রেস সাংসদের দাবি, আগের ইউপিএ সরকারের আমলে ২৭ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার উপরে উঠে এসেছিল। গত সাত বছরে এই মোদী সরকার ২৩ কোটি মানুষকে ফের দারিদ্রসীমায় পাঠিয়ে দিয়েছে। দেশের ৮৪ শতাংশ মানুষের রোজগার কমেছে। বিজেপির এই সরকার যে কর্পোরেট বান্ধব তা আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন রাহুল। অভিযোগ করলেন, ‘আজ দেশের সব সম্পদ কুক্ষিগত মুষ্টিমেয় শিল্পপতির হাতে। ১০ জন সবচেয়ে ধনী ভারতীয়র হাতে অন্য প্রান্তের ৪০ কোটি ভারতীয়র থেকে বেশি সম্পদ আছে। বন্দর থেকে বিমানবন্দর সব আদানিদের হাতে। অথচ আরেক ভারতের প্রতিনিধিদের হাতে কিছুই নেই’।
রাহুল এদিন সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছেন বেকারত্ব এবং অর্থনীতি নিয়ে। তাঁর বক্তব্য, মোদী সরকার বারবার যে স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, মেড ইন ইন্ডিয়ার কথা বলে সবটাই ভাঁওতাবাজি। মেড ইন ইন্ডিয়া সম্ভবই নয়, কারণ যারা এই কাজটা করবে সেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের শেষ করে দিয়েছে সরকার। অসংগঠিত ক্ষেত্রে বলে আজ দেশে আর কিছু নেই। কংগ্রেস নেতার অভিযোগ, এক বছরে ৩ কোটি মানুষ চাকরি খুইয়েছেন। আজ দেশে বেকারত্বের হার ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। আপনারা চাকরি তো দিতে পারছেনই না। উল্টে যে রোজগার তাঁদের হাতে ছিল, সেটাও ছিনিয়ে নিচ্ছেন।
রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, বিজেপি সরকার ভারতের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়ে ‘রাজাদের শাসন’ ফেরাতে চাইছে। ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস যে শাসনের অবসান ঘটিয়েছে, সেই শাসনে ফেরাতে চাইছে। নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থা, পেগাসাস সব গণতন্ত্র ধ্বংস করার কাজে এই সরকারের অস্ত্র। কিন্তু সেটা কখনও সম্ভব নয়, গরিব ভারতবর্ষ জাগবেই। সরকারের বিদেশনীতি নিয়েও সরব হয়েছেন রাহুল। তাঁর অভিযোগ, ভারতের জনগণের প্রতি বিজেপির করা সবচেয়ে অন্যায় হল, তাঁরা চীন আর পাকিস্তানকে একসারিতে বসিয়ে দিয়েছে। চীন আর পাকিস্তান আলাদা শক্তি।