প্রত্যাশা ছিল অপরিসীম। কোভিড, লকডাউনের বিপুল ক্ষতির ক্ষতে মলম দেবেন নির্মলা সীতারমন, এই প্রত্যাশাতেই বুক বেঁধেছিল উত্তরের অর্থনীতির অন্যতম চা শিল্প। কিন্তু মেলেনি কিছুই। কেন্দ্রীয় সাধারণ বাজেটে চা শিল্পে পাওয়ার ভাঁড়ার কার্যত শূন্য! এতে হতাশ উত্তরের চা বণিকমহল। বিশ্বজোড়া খ্যাতি দার্জিলিং চায়ের রফতানি থেকে স্পেশাল প্যাকেজ কিংবা কেন্দ্রীয় ভরতুকি। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে গতকাল টেলিভিশনের পর্দায় চোখ রেখেছিলেন চা শিল্পপতিরা। দিন শেষে জুটেছে স্রেফ হতাশা।
পাহাড় থেকে তরাই কিংবা ডুয়ার্সের চা বলয় নিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেটে সময় খরচ হয়নি বললেই চলে। ধুঁকতে থাকা চা শিল্প বা বন্ধ চা বাগান নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ঘোষণাই ছিল না কিছু। ফলে ক্ষুব্ধ ও হতাশ চা বণিকমহল। একেই দার্জিলিং চায়ের রফতানি অনেকটাই মার খেয়েছে। নেপাল চা ধরে নিয়েছে দার্জিলিং চায়ের বাজার। ভারতে নেপাল চায়ের আমদানিতে কোনও উৎপাদন শুল্ক নেই। অন্যদিকে নেপালে ভারতীয় চা রফতানি করতে গেলে উৎপাদন শুল্ক দিতে হয় ৪০ শতাংশ।
২০১৭-তে পৃথক রাজ্যের দাবিতে টানা ১০০ দিনের বেশি সময় পাহাড় বন্ধের বড় প্রভাব পড়ে দার্জিলিং চায়ের উৎপাদনে। আর উৎপাদন মার খাওয়ায় বিদেশে রফতানিতেও ভাঁটা পড়ে। মূলত আমেরিকা, ব্রিটেন, ইংল্যাণ্ডের মতো দেশে দার্জিলিং চায়ের কদর বরাবরই আলাদা। কিন্তু সেইসময়ে উৎপাদন কম হওয়ার সুযোগে বাজার ধরে ফেলে নেপাল চা। তা আজও ক্রমেই বাড়ছে। এর থেকে মুক্তি চায় উত্তরের চা মালিকরা। তার পর কোভিডের প্রথম ঢেউয়ে মার খায় ফার্স্ট ফ্লাশ চা। আর এই ফার্স্ট ফ্লাশই সবচাইতে দামি চা।
এখানকার চা শিল্পপতিরা আশা করেছিলেন, ২০২২-এর কেন্দ্রীয় বাজেটে বড়সড় কিছু ঘোষণা করবেন নির্মলা সীতারমণ। যা শিল্প ক্ষেত্রে জোয়ার আনবে। পরিবর্তে ঘিরে ধরেছে একরাশ হতাশা। কেন্দ্রীয় বাজেটে ঠাঁইই পেল না উত্তরের চা শিল্প। চা শিল্পপতি মহেন্দ্র বনসাল জানান, এককথায় ধুঁকতে থাকা উত্তরবঙ্গের চা শিল্প নিয়ে বাজেট হতাশই করেছে। টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইণ্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের সেক্রেটারি সুমিত ঘোষ বলেন, এবারের বাজেটে প্রত্যাশা ছিল অনেক। ফল মিলেছে শূন্য।