এবার ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ‘সাম্মানিক’ সরাসরি তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকবে। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে সাম্মানিকের অর্থ অ্যাকাউন্টে ঢোকার পদ্ধতি সম্পূর্ণ হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিয়মিত সাম্মানিক প্রদানের এই ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনধিরা। পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ডিসেম্বর মাসের ‘সাম্মানিক’ চলতি জানুয়ারি মাসের মধ্যেই পঞ্চায়েত জনপ্রতিনিধিদের অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে। জানুয়ারি মাসের প্রাপ্য সাম্মানিকও যথাসময়ে হাতে পাবেন জনপ্রতিনিধিরা। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশিত নতুন এই ব্যবস্থায় উপকৃত হবেন ৩২২৯ জন প্রধান, একই সংখ্যক উপপ্রধান, ১২৯১৬ জন সঞ্চালক, ২৯,৭১৭ জন সদস্য, ৩৩৬ জন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, একই সংখ্যা সহ সভাপতি, ৩০০৬ জন কর্মাধ্যক্ষ, ৫,৫৩০ জন সদস্য, ২১ জন জেলা পরিষদের সভাধিপতি, একই সংখ্যক সহ সভাধিপতি , ১৮৭ জন কর্মাধ্যক্ষ এবং ৬০২ জন সদস্য মিলিয়ে মোট জনপ্রতিনিধির সংখ্যা ৫৯,১৩০। তাঁদের সাম্মানিক বাবদ প্রতিমাসে খরচ হবে ২১ কোটি ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৮০০ টাকা। যা বরাদ্দ করেছে অর্থ দপ্তর। গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ত্রিস্তরীয় জনপ্রতিনিধিদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য জোগাড় করেছিল পঞ্চায়েত দপ্তর। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই সাম্মানিক ঢুকতে শুরু করেছে অ্যাকাউন্টে।
পাশাপাশি পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়তের জনপ্রতিনিধিদের সাম্মানিক প্রদান পর্বে চারটি ধাপ ছিল। অর্থ দপ্তর মঞ্জুর করার পর তা যেত পঞ্চায়েত কমিশনারের কাছে। সেখান থেকে যেত সংশ্লিষ্ট জেলার পঞ্চায়েত আধিকারিকের (ডিপিও) কাছে। তারপর তা যেত সংশ্লিষ্ট বিডিও’র কাছে। সাম্মানিক প্রদান করা হতো নগদে। কিন্তু এই প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায় নিয়মিত সাম্মানিক মেলার ক্ষেত্রে নানা প্রতবন্ধকতা তৈরি হতো। এমনকী ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের কারও কারও সাম্মানিক তিন থেকে ১১ মাসের মতো বকেয়া পড়ে থাকত। এই ব্যবস্থার সরলীকরণ করতেই রাজ্যের নতুন পঞ্চায়েত মন্ত্রী পুলক রায়কে নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই নির্দেশ অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিদের সাম্মানিক নিয়মিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে তা কার্যকর করছে পঞ্চায়েত দপ্তর। প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার পরে পঞ্চায়েতের জনপ্রতিনিধিদের সাম্মানিক বাবদ প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ বাড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পঞ্চায়েত দফতর সূত্র অনুযায়ী, পঞ্চায়েত প্রধানরা মাসিক ৫ হাজার টাকা, উপপ্রধানরা ৪ হাজার টাকা, সঞ্চালকরা ৩৮০০ টাকা, সদস্যরা ৩ হাজার টাকা, পঞায়েত সমিতির সভাপতি ৬ হাজার টাকা, সহ সভাপতি ৫৫০০ টাকা, কর্মাধ্যক্ষ ৫ হাজার টাকা, সদস্যরা সাড়ে তিন হাজার টাকা, জেলাপরিষদের সভাধিপতিরা ৯ হাজার টাকা, সহ সভাধিপতি ৮ হাজার টাকা, কর্মাধ্যক্ষরা ৭ হাজার টাকা এবং সদস্যরা ৫ হাজার সাম্মানিক পেয়ে থাকেন।