দুঃসময়ের অন্ত নেই গেরুয়াশিবিরে। বঙ্গ বিজেপির গৃহযুদ্ধ যে এখনই থামছে না, তা কার্যত নিশ্চিত। রাজ্য নেতৃত্বের একাধিক গোষ্ঠীতে বিভেদ তো ছিলই, এবার বিজেপির সাংগঠনিক জেলা কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে প্রকট হল অন্তর্দ্বন্দ্ব। এবার উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সুনীতা ঝাওয়ার বৃস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন। সুনীতাদেবীর ঘনিষ্ঠ মহলের বক্তব্য, জেলার সহ-সভাপতি করার বিষয়টি মোটেও ভালভাবে নেননি তিনি। জেলা কমিটি থেকে সব আদি বিজেপি কর্মীকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদেই তাঁর এই পদত্যাগ। ঘোষিত বিজেপির উত্তর কলকাতা জেলা কমিটিতে দলবদলু সজল ঘোষকে আনা হয়েছে সাধারণ সম্পাদক পদে। কিন্তু ঠাঁই হয়নি দীর্ঘদিনের দুই বিজেপি নেতা তথা কলকাতা পুরসভার কাউন্সিলার মীনাদেবী পুরোহিত এবং বিজয় ওঝা। তাতেই বিতর্কের ঝড় উঠেছে পদ্মশিবিরের অন্দরে। যদিও কল্যাণ চৌবেকে পাঠানো চিঠিতে কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন এই কাউন্সিলার লিখেছেন, “আমি দলের সাধারণ কর্মী হিসেবে কাজ করতে চাই।” কিন্তু চিঠির এমন বয়ান পরোক্ষে তাঁর বঞ্চিত হওয়ার অভিমানের বহিঃপ্রকাশ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এরপর বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে দেরি করেননি বহিষ্কৃত বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারি। টুইট করে এ বিষয়ে বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারি বলেন, “প্রকৃত বিজেপি কর্মীরা দলে আজ ব্রাত্য। পাঁচ বারের কাউন্সিলর সুনীতা ঝাওয়ারই তার উদাহরণ। সারা রাজ্য বিজেপিতেই এই ছবি।” এদিকে সুনীতা ঝাওয়ারের স্বামী জানিয়েছেন, জেলা সভাপতি কল্যাণ চৌবেকে বলার পরেও সহ সভাপতি হিসেবে কেন সুনীতার নাম রাখা হল, সেটা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। শুধু কলকাতাই নয়, জেলাগুলিতেও বিজেপির অন্দরমহলে চলছে চাপানউতোর। কারণ, পুরনো বহু কর্মীই স্থান পাননি জেলা কমিটিতে। একইভাবে তালিকায় জুড়েছে বহু নতুন মুখ। ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, কাঁথি, বাঁকুড়াতেও একই ছবি দেখা যাচ্ছে। ঠিক সেই পরিস্থিতির মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে বিজেপিতে বিদ্রোহীদের চড়ুইভাতি চলছেই। গতকাল, বৃহস্পতিবারও তাঁর সংসদীয় এলাকা ঠাকুরনগর এবং কল্যাণীতে দুটি পিকনিকে অংশগ্রহণ করেন শান্তনু-সহ বিক্ষুব্ধরা।
