লগ্নী টানার লক্ষ্যে মোদী সরকার চালু করেছে ন্যাশনাল সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম। সেখানে ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছে বিভিন্ন রাজ্য। কিন্তু বেশ কয়েকটি বিজেপি শাসিত রাজ্যই সেই পরিকাঠামোয় যোগ দেয়নি। আর তাতেই কেন্দ্রের ওই পরিকাঠামোর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শিল্প মূলত রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে। কোনও রাজ্য যদি লগ্নী টানতে আগ্রহী হয়, তাহলে সেই রাজ্যকেই তার জন্য পরিকাঠামো গড়তে হয়। পাশাপাশি শিল্প গড়ার জন্য যে প্রশাসনিক ছাড়পত্র প্রয়োজন, তারও ব্যবস্থা করতে হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে। যে রাজ্য যত বেশি শিল্পবান্ধব প্রশাসনিক ছাড়পত্র দেয়, সেখানে তত বেশি লগ্নি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়। বিগত কয়েক বছর ধরে বিশ্ব ব্যাঙ্ক বিভিন্ন দেশের উপর র্যাঙ্কিংও চালু করেছে এই বিষয়ে। যে দেশে যত বেশি শিল্পবান্ধব প্রশাসন, সেই দেশকে তত সামনের সারিতে নিয়ে আসছে তারা। গোটা বিশ্বের লগ্নিকারীদেরও নজর থাকছে সেইসব দেশের দিকেই। তাই বিশ্ব ব্যাঙ্কের তালিকায় উপরের সারিতে উঠে আসতে রাজ্যগুলিও নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা শুরু করেছে। শিল্প মহল বলছে, লগ্নী বাস্তবায়িত করতে যেমন রাজ্যের উদ্যোগ দরকার, তেমনই কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তাও প্রয়োজন।
এরপর কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক করে, শিল্পের প্রশাসনিক ছাড়পত্র দিতে তারা নিজেরাই একটি সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম চালু করবে। সেই মতো কাজও এগোয়। এখন সেই পোর্টালে অংশ নিয়েছে কেন্দ্রের সেইসব মন্ত্রক, যারা শিল্প স্থাপনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। যেহেতু শিল্প মূলত রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারে পড়ে, তাই তাতে অংশ নিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্যও। আশ্চর্যের বিষয়, সেখানে যোগ দেয়নি বিজেপিশাসিত একাধিক রাজ্য। সেই তালিকায় আছে উত্তর-পূর্ব ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা, সিকিম ছাড়াও বিহার, হরিয়ানা, পন্ডিচেরি। কেন এই রাজ্যগুলি কেন্দ্রের এই উদ্যোগে নেই, তার কোনও ব্যাখ্যা নেই। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে বিজেপিশাসিত রাজ্য সরকারগুলিই নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে ভরসা করতে পারছে না, সেখানে আদৌ ওই সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমের গ্রহণযোগ্যতা আছে কি? প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কেন্দ্রের এই উদ্যোগে সামিল হয়নি। এরাজ্যের শিল্প দফতরের কর্তাদের বক্তব্য, রাজ্য সরকার নিজেই একটি সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেম চালু করেছে, যেখানে রাজ্য সরকারের তরফে সব রকমের প্রশাসনিক ছাড়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তা লগ্নীর জন্য শিল্পমহলের কাছে যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য, জানিয়েছে সরকার।