হাতে আর এক সপ্তাহও নেই। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। দেশে এই মুহূর্তে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। স্বাস্থ্য থেকে অর্থনীতিতে ত্রাহি ত্রাহি রব। এই পরিস্থিতিতে নির্মলার বাজেটের দিকে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে তাকিয়ে রয়েছেন সাধারণ মানুষ, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে অর্থনীতিবিদ, শেয়ার বাজারের কারবারিরাও। নির্মলার চতুর্থ বাজেটে ১০টি পদক্ষেপের আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রথম হল স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বৃদ্ধি। এই বাজেটে স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানোর আশা করছেন বেতনভোগী শ্রেণী। করোনায় মানুষের চিকিৎসা খরচ বেড়েছে। তার ওপর রয়েছে মুদ্রাস্ফীতি। বিশেষ করে পেট্রোল ডিজেলের ক্রমবর্ধমান দামে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির জীবনধারণ কঠিন হয়ে গিয়েছে। তাই স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন বাড়ানো দরকার। বার্ষিক ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে তা ৭৫ হাজার টাকা করার আবেদন জানানো হয়েছে নির্মলার কাছে।
বর্তমানে স্বাস্থ্য বিমায় ১৮ শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হয়। করোনা আবহে যা অনেকটাই বেশি। উচ্চ হারে জিএসটি-র জন্যই সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য বিমা এড়িয়ে চলেন। তাই রয়েছে স্বাস্থ্য বিমায় জিএসটি ছাড়ের দাবিও। আবার, করোনা পরিস্থিতিতে শক্তিশালী অর্থনীতি গড়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা। তাঁদের মতে, এই পরিস্থিতিতে আর্থিক পরিকাঠামো এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে।
এদিকে, অর্থনীতিবিদরা সম্পদ এবং উত্তরাধিকার কর আরোপের পক্ষে। তাঁদের মতে, এটাই সমাজে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করবে। করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল শ্রেণীর মানুষ। ধনী এবং গরিবের আয়ের ব্যবধান দৃষ্টিকটু ভাবে বেড়েছে। সম্পদ এবং উত্তরাধিকার কর আরোপের মাধ্যমে এই ব্যবধান কিছুটা হলেও কম করা যেতে পারে। বাড়ি থেকে যারা কাজ করছেন বাজেটে তাঁদের জন্য পৃথক ছাড় ঘোষণা করার দাবি রয়েছে।
২০২০ সালে লকডাউনের সময় বিপুল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক শহর থেকে গ্রামে ফিরে এসেছিলেন। এঁদের মধ্যে অধিকাংশই এখনও গ্রামেই থাকছেন। এঁদের আয়ের বড় উৎস হল মনরেগা। তাঁদের জন্য ১০০ দিনের কাজ নিশ্চিত করতে হবে। এই খাতে তাই বড়সড় বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রয়োজন। আবার, বিগত কয়েক বছর ধরে বাজার ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য খুব একটা লাভজনক না হওয়ায়, আপাতত সিকিউরিটি ট্র্যানজাকশান ট্যাক্সে ছাড় বা তা সম্পূর্ণরূপে তুলে দেওয়াই শ্রেয় বলে দাবি জানিয়েছেন দালাল স্ট্রিটের কর্মচারীরা।
অন্যদিকেক্স কয়লা, পেট্রোল, ডিজেলের বদলে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। জোর দিতে হবে সৌর বিদ্যুৎ, হাইড্রোজেন, বায়োফুয়েলে। গবেষণা এবং প্রচার খাতেও বরাদ্দ বাড়ানো জরুরী। স্টার্ট আপ কোম্পানিগুলির জন্যও আকর্ষণীয় নীতি ঘোষণার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়া বৈদ্যুতিন গাড়ি সংক্রান্ত গবেষণা এবং উন্নয়ন খাতে সরকারের আরও তহবিল বরাদ্দ করা উচিত বলেও মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।