মঙ্গলবার সংবিধানপ্রণেতা বিআর আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা দিতে বিধানসভায় গিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। কিন্তু সেই কর্মসূচীতে তিনি একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যের প্রশাসন এবং বিধানসভার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। প্রশ্ন শুধু রাজ্যপালের বক্তব্য ঘিরে নয়, প্রশ্ন উঠেছে রাজ্যপালের সৌজন্য নিয়েও। বিধানসভায় আম্বেদকরের মূর্তিতে মালা দিতে গিয়ে একজন রাজ্যপাল আদৌ এ ধরনের বক্তব্য রাখতে পারেন কি না তা নিয়ে বাম, কংগ্রেসের সুর একইরকম। তাদের বক্তব্য, রাজ্যপালের পদকে ব্যবহার করে সরকারি কর্মসূচীতে গিয়ে এভাবে কথা বলা সমীচীন নয়। বিজেপি অবশ্য বলছে, ঠিকই করেছেন ধনখড়। সাংবিধানিক রীতিনীতি দূরে রেখে এখানে রাজত্ব বলে তোপ তাদের। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, বিজেপির এই মুহূর্তে বাংলায় যে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তা থেকে নজর ঘোরাতেই এই চাল।
‘রাজ্যপাল অতিরিক্ত কিছু কাজ করছেন বাংলায়।’ এমনটাই মত বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের। রাজ্যের এই প্রাক্তন মন্ত্রীর কথায়, “বিধানসভার মধ্যে অধ্যক্ষই সর্বোচ্চ। অধ্যক্ষকে ছোট করার চেষ্টা করা সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে নজিরবিহীন, খুব খারাপ! এটা কাম্য নয়।” অন্যদিকে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর কথায়, “ব্যক্তি জগদীপ ধনকরের রাজনৈতিক মত থাকতেই পারে। কিন্তু রাজ্যপাল পদকে ব্যবহার করে সেটা বলার কথা? উনি যে স্থানে কথাগুলো বলেছেন তা একেবারেই ভুল বলে আমি মনে করছি। এটা চলে না। এভাবে রাজ্যপাল পদ ও রাজভবনের অমর্যাদা করা হল।”
পাশাপাশি, তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কাছে রাজ্যপালের বক্তব্য “অবান্তর, অবাস্তব এবং সংবিধানবিরোধী।” তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, “রাজ্যপাল পদটার সাংবিধানিক গুরুত্ব উনি ধূলোয় লুটিয়ে দিয়েছেন। আসলে উনি বিজেপি করেন। এ রাজ্যে বিজেপি তো আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গিয়েছে। বিজেপির লোকেরাই বলছে ওদের দলে গণতন্ত্র নেই। এই মুহূর্তে চরম অস্বস্তিতে দলটা। বিজেপির এই অবস্থা থেকে নজর ঘোরানোর জন্যই বিজেপির দূত এই কথাগুলো বলেছেন।” প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলছেন, রাজ্যপালের কথায় সংযম থাকা দরকার। অধীরের মতে, “রাজ্যপাল যাই বলুন না কেন, ওনার বক্তব্যে সংযম থাকাটা বাঞ্ছনীয়। বাংলায় গণতন্ত্র নেই এ কথা সম্পূর্ণ সত্যি বলে মনে করি না।”