রাজ্যে স্কুল খোলা নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানানরকম কথা শোনা গেলেও আদতে এখনই তা কতটা সম্ভব হবে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ১৫ই ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে উচ্চ মাধ্যমিকের প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা। শেষ হবে ৪ঠা মার্চ। এরপর ৭ই মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক পরীক্ষা। ১৬ই মার্চ পর্যন্ত তা চলবে। ২রা এপ্রিল থেকে ২০শে এপ্রিল উচ্চ মাধ্যমিক চলবে। ফলে এই সময়গুলিতে স্কুল বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় নেই। তার উপর রয়েছে পুরভোট এবং সেই সংক্রান্ত প্রস্তুতিও। তাই টেলিভিশন, টেলিফোন এবং অনলাইনে পাঠদানের বিষয়ে বেশি ঝুঁকতে দেখা যাচ্ছে শিক্ষাদফতরকে।
পাশাপাশি, ইতিমধ্যেই টেলিভিশনে শুরু হয়েছে নিচু ক্লাসের পাঠদান। আবার কাল সোমবার থেকে একটি বেসরকারি বাংলা চ্যানেলে প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে চলবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস। সরকারের উদ্যোগ এখানেই শেষ নয়। স্কুল বন্ধ থাকায় পঠন-পাঠনের পাশাপাশি মানসিক ক্ষতিও হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে স্কুল শিক্ষাদপ্তর, উচ্চশিক্ষা সংসদ এবং সমগ্র শিক্ষা মিশন একটি ওয়েবিনার সিরিজের আয়োজন করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘উজ্জীবন চর্চা’। প্রথম ওয়েবিনারটি হবে আজ রবিবার। প্রথম অধিবেশন দুপুর ১২টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত। এটি একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য। দ্বিতীয় অধিবেশন দুপুর দেড়টা থেকে আড়াইটে পর্যন্ত। সেটি শুধুমাত্র স্কুল শিক্ষকদের জন্যই হবে। একাধিক মনোবিদ এবং মনোচিকিৎসক শিক্ষাবিদ এই প্যানেলে থাকবেন। মডারেটর হিসেবে থাকার কথা সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ সিংহ মহাপাত্রের।
তবে স্কুল খোলার বিষয়টি যে পিছিয়ে যাচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলছে রাজ্য সরকারের আরও একটি উদ্যোগে। এলাকায় সমষ্টিগত শিক্ষার উন্নয়নের জন্য ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ নামে একটি প্রকল্প চালু করছে রাজ্য সরকার। কাল সোমবার বিকাশ ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এর আগে ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঠ বুঝিয়ে আসার নির্দেশ দিয়েছিল বিকাশ ভবন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে সেটা দারুণ সফল হয়েছিল, এমন নয়। এবার পাড়াওয়াড়ি ক্লাসরুম করে আরও বেশি বাস্তবসম্মত পথে এগতে চাইছে রাজ্য সরকার। শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিক জানান, ক্লাসরুমের পড়াশোনার বিকল্প হয় না, তবে খামতি যতটা পুষিয়ে দেওয়া যায়, তার সর্বোচ্চ চেষ্টা রাজ্য সরকার করে চলেছে। তিনি বলেন, এর আগে স্কুল খোলা হলেও হাজিরা আশাব্যঞ্জক ছিল না। তার ওপরে ওমিক্রন এখন ছোটদেরও রেয়াত করছে না। তাই অভিভাবকদের একটা বড় অংশই ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠানোর বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন। সে সব মাথায় রেখেই আরও বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে এগিয়ে আসছে রাজ্য সরকার।