ফের উধাও শীত। শনিবারের সকালেই ফের বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু করল শহর কলকাতা। ঝিরঝিরে বৃষ্টি, সঙ্গে মেঘলা আকাশ। কলকাতা শহরের ভোরের আকাশটা এমনই। শুধু কলকাতাই নয়, একাধিক জেলায় ভারী বর্ষণের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আবহাওয়া দফতর। বৃষ্টি কাটিয়ে কবে ফের মিলবে শীতের দেখা তা নিয়েও রয়েছে আশঙ্কা।
জলবায়ু বদলের চক্করে বাংলা কীভাবে ভুগতে পারে তা নিয়েও নানা মুনির নানা মত। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ‘হ্যাজার্ড অ্যাটলাস’-এও সেই প্রতিফলন ঘটেছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, জলবায়ু বদলের ইঙ্গিত তো রয়েছেই, সেই সঙ্গে বাড়ছে ঝড়, বন্যা, অতিবর্ষণ, বজ্রপাত ও খরার বিপদও। গাঙ্গেয় বঙ্গের দুটি জেলায় যে খরার প্রকোপ দেখা যেতে পারে সে আশঙ্কার কথাও ওই রিপোর্টে উঠে এসেছে।
অ্যাটলাসে প্রকাশিত ১৯৬১ সাল থেকে ২০২০ সালের তথ্য বিশ্লেষণ করলে ঘূর্ণিঝড়ের বিপদের তালিকায় রয়েছে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর। এই তিন জেলায় রয়েছে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও। খরা দেখা দিতে পারে বীরভূম ও নদিয়ায়। অতিবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনা ও হাওড়া বাদে গোটা রাজ্যে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে প্রচুর পরিমাণে জ্বলীয়বাষ্প বঙ্গে প্রবেশ করায় আগামী ৪৮ ঘণ্টা কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলাতেই বৃষ্টিপাত হবে।
বৃষ্টিপাক হবে উত্তরবঙ্গের জেলাতেও। সিকিম ও দার্জিলিঙে তুষারপাতের আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দুই ২৪ পরগনাতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। আগামী দুই দিনেও আবহাওয়ার বিশেষ পরিবর্তন হবে না বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, শনিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ১ ডিগ্রি কম। এদিন শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ ৯৮ শতাংশ।
সকাল থেকেই ঘন কুয়াশার চাদরে মোড়া কলকাতা ও শহরতলীর বিভিন্ন এলাকা যেমন- রাজারহাট, নিউটাউন, সল্টলেক বাগুইহাটি এয়ারপোর্ট । দু-এক পশলা বৃষ্টি শুরু হয়েছে নিউটাউনে। ঘন কুয়াশার কারণে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। নিউটাউন বিশ্ববাংলা সরণিতে গাড়ির হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলছে গাড়ি।
পাশাপাশি বিমানবন্দরে ঘন কুয়াশার কারণে দৃশ্যমানতা কম তবে বিমান চলাচলের ক্ষেত্রে তার কোনো প্রভাব নেই। শনিবার সকাল সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত বিমানবন্দরে দৃশ্যমানতা ছিল ৯০০ মিটার, সাতটা নাগাদ দৃশ্যমানতা কমে দাঁড়ায় ৭৫০ মিটার।
আবহবিদরা আরও জানিয়েছেন, পশ্চিমী ঝঞ্ঝা সাধারণত কাশ্মীর থেকে ভারতে প্রবেশ করে। তার জেরেই উত্তর ভারতে তুষারপাত হয়। কিন্তু, সম্প্রতি একের পর এক পশ্চিমী ঝঞ্ঝা উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে মধ্য ভারত হয়ে সরাসরি বঙ্গে প্রবেশ করছে। যার জেরে পিছু হটছে শীত। তাই আপাতত জাঁকিয়ে ঠান্ডা পরার সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।