আগামী দু’বছরের মধ্যে রাজ্যে গৃহহীনদের জন্য ৫০ লক্ষ বাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে চায় রাজ্য। পঞ্চায়েত এলাকার জন্য ‘বাংলার আবাস যোজনা’ এবং শহরাঞ্চলের জন্য ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের আওতায় এই বাড়িগুলি তৈরি হচ্ছে। গত ১০ বছরে এই দু’টি প্রকল্পের আওতায় ৪৫ লক্ষ ৮৭ হাজার ৭১৭টি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। মাথার উপর স্থায়ী ছাদ পেয়েছে রাজ্যের এতগুলি পরিবার।
এই সংখ্যাই আগামী দু’বছরের মধ্যে ৫০ লক্ষে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এগোচ্ছে রাজ্য। সম্প্রতি এই কাজের পর্যালোচনার জন্য নবান্নে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পর এই লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়।
স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত প্রকল্প রূপায়নের জন্য পঞ্চায়েত এবং পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত গরিব মানুষই যাতে সুযোগ পান, সেই জন্য উপভোক্তাদের তালিকা ভালোমতো খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, সবার মাথায় যেন ছাদ থাকে। সেইমতো প্রকল্পের কাজ এগচ্ছে।
এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির ক্ষেত্রে জিও ট্যাগিং চালু করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পুরস্কৃত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ‘বাংলার আবাস যোজনা’ প্রকল্প অন্য সব রাজ্যকে এক্ষেত্রে পিছনে ফেলে দিয়েছে। সেই ধারা বজায় রাখার জন্য পঞ্চায়েত দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে ‘বাংলার আবাস যোজনা’ প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকায় ৪৪ লক্ষ ২৫ হাজার ৭১৭টি বাড়ি তৈরি করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। যার মধ্যে বর্তমান অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৩২৪টি। এক-একটি বাড়ির জন্য দেওয়া হয়েছে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এর মধ্যে উপভোক্তাকে দিতে হয় ২০ হাজার টাকা।
বাকি টাকা দেয় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। বাড়ি তৈরি নিয়ে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছিল নবান্নে। সেগুলির তদন্ত করে ইতিমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। প্রকল্পের খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখতে ১৬টি জেলায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শহরাঞ্চলে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত তৈরি হয়েছে ১ লক্ষ ৬২ হাজার বাড়ি।
এক-একটি বাড়ির জন্য খরচ দেওয়া হয়েছে ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা। যার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দেয় মাত্র দেড় লক্ষ টাকা। রাজ্য সরকার দেয় ১ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা। যা অন্যান্য সব রাজ্যের তুলনায় বেশি।
উপভোক্তাকে দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা। বর্তমান আর্থিক বছরে আরও ১ লক্ষ ১০ হাজার বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। ২০২৩ সালের ৩১ শে মার্চের মধ্যে রাজ্যের পুর এলাকায় আরও এক লক্ষ গরিব মানুষের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে নবান্ন।