গত দু’বছরে রাজ্য বারবার আঘাত হেনেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ফসল কেটে রাতারাতি গুদামে তোলার প্রয়োজন হয়েছে। যশ থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রাজ্যের উদ্যোগে কম্বাইন্ড হারভেস্টার (বিভিন্ন ফসল একসঙ্গে কাটার উপযুক্ত যন্ত্র) ব্যবহার করেই বাঁচানো হয়েছে বিঘার পর বিঘার ফসল। এই হারভেস্টার সহ অন্যান্য উন্নত মানের কৃষিকাজে ব্যবহৃত যন্ত্র চাষীরা খুব সহজেই পেয়ে থাকেন রাজ্যের সহায়তায় তৈরি কাস্টম হায়ারিং সেন্টার বা কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র থেকে। এবার এরকম আরও ১৪৫টি নতুন কেন্দ্র তৈরি হতে চলেছে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের অধিকাংশই প্রান্তিক চাষী। তাঁরা যাতে খুব সহজেই উন্নত মানের যন্ত্র ব্যবহার করে চাষ করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্যে ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যজুড়ে কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন রাজ্যে প্রায় ১৮৪৫টি কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র রয়েছে। তবে এখনও কিছু ব্লকে এই পরিকাঠামো নির্মাণের প্রয়োজন। চিহ্নিত করেছে কৃষিদপ্তর। এই ব্লকগুলিতেই মার্চের মধ্যে তৈরি করা হবে আরও ১৪৫টি কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র। অতএব, এই অর্থবর্ষের শেষে রাজ্য হাজার দু’য়েক কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র পাবে। এই কেন্দ্রগুলি তৈরি করার পাশাপাশি রাজ্য কৃষিক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের জন্য আরও নানান পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চালাচ্ছে। এবং এর দরুন অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১২০ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, এক-একটি কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করতে খরচ পড়ে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। এগুলি তৈরির জন্য রাজ্য সরকারকে দিতে হয় মোট খরচের ৪০ শতাংশ অথবা এক কোটি টাকার অনুদান। আর কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র তৈরি করার জন্য ইচ্ছাপত্র গ্রহণ করা হয় অনলাইনে। কম্বাইন্ড হারভেস্টারের পাশাপাশি এই কেন্দ্রগুলিতে থাকে আলু ও ধান চাষের জন্য প্রয়োজনীয় ট্রান্সপ্লান্টারের মতন উন্নত মানের যন্ত্রপাতি। জিও ট্যাগিং এবং প্রত্যেকটি যন্ত্রপাতির উপর লাগানো হয় সরকারি ফলক, যাতে কেউ রাজ্যের সহায়তায় কেনা যন্ত্রপাতি গুলি বিক্রি না করতে পারে। কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, চাষীদের যাতে কোনওরকম ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে না-হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করে কৃষিদফতর। আর এই কৃষি সরঞ্জাম সহায়তা কেন্দ্র তৈরি হলে আরও অনেক বেশি কৃষক উপকৃত হবেন।