করোনার হানার আগে থেকেই ভারতের কর্মক্ষেত্রে চরম সঙ্কট ছিল। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা মেরেছে অতিমারি। আর এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কর্মসংস্থান। দেশের একটি বড় অংশের মানুষ কার্যত বেকার হয়ে গিয়েছেন। গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র একই অবস্থা। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। আর তাতে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরিই হবে তাঁর প্রধান চ্যালেঞ্জ।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনার হানার আগে অর্থনীতি সংকোচনের মুখে পড়েছিল দেশ। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যাকে বলেছিল, ‘ঐতিহাসিক প্রযুক্তিগত মন্দা’। অর্থনীতির গতি প্রায় রুদ্ধ হয়ে গিয়েছিল। কেনাকাটা কমিয়ে দিয়েছিল সাধারণ মানুষ। ধাক্কা খেয়েছিল বিনিয়োগের বাজারও। ঠিক সেই সময় আছড়ে পড়ে করোনা। জীবন-জীবিকা প্রায় লাটে উঠে যায়। বন্ধ হয়ে যায় ব্যবসা। অকল্পনীয় ক্ষতির মুখে পড়ে অর্থনীতি। শুধু ভারতের নয় গোটা বিশ্বের।
আইএমএফ জানিয়েছে, ২০২০ সালে ৩.২ শতাংশ সংকুচিত হয় বিশ্ব অর্থনীতি। অনুমান করা হয়েছিল, পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে অর্থনীতি ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু তেমনটা ঘটেনি। ২০১৯ সালে বিশ্ব অর্থনীতি মাত্র ২.৮ শতাংশ বৃদ্ধির মুখ দেখেছিল। তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী দিনে এই পতনের হার আরও বাড়বে। ভারতও রেহাই পাবে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতিতে নিজেকে গুটিয়ে না রেখে ভারতের উচিত, সুবিধেগুলি উন্মোচন করা।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ সালের একটি সমীক্ষায় দেশের বেকারত্বের হার বিগত ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছিল। এরপর অতিমারির জেরে আরও বৃদ্ধি পায় বেকারত্বের সমস্যা। দেশজুড়ে লকডাউনের জেরে স্তব্ধ হয়ে যায় কল-কারখানা। কাজ হারান লক্ষাধিক মানুষ। ২০১১-১২ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রায় ৯০ লক্ষেরও বেশি মানুষ কাজ হারিয়েছেন। এরপরই করোনার ঢেউ আছড়ে পড়ে দেশে। যার ফলে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটে বহু সংস্থাগু। নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও স্থগিত। এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ কর্মসংস্থান তৈরি।