সর্বভারতীয় স্তরের আমলাদের নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের নিয়ম ‘ক্যাডারস রুল’-এ বদল আনতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। তাদের সেই সংশোধনীর প্রতিবাদ জানিয়ে গত ১৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু এর মধ্যেই কেন্দ্রের তরফে এই সংশোধনী প্রস্তাবকে আরও কঠোর করা হয়। নিয়মের নয়া রদবদলকে ‘দানবীয়’ বলে উল্লেখ করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিতীয়বার চিঠি লিখলেন বাংলা মুখ্যমন্ত্রীর। জানালেন, কেন্দ্রের এই সংশোধনী প্রস্তাবর যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর একেবারে পরিপন্থী।
১৯৫৪ সালের আইএএস (ক্যাডার) রুলসের সংশোধনের প্রস্তাব এনেছে কেন্দ্র। এই আইন অনুযায়ী আইএএস বা আইপিএস আমলাদের রাশ কেন্দ্র ও রাজ্যের পারস্পরিক মত আদানপ্রদানের ভিত্তিতেই স্থির হয়ে থাকে। রাজ্য প্রশাসনের অভিযোগ, আইন সংশোধন করে আমলাদের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে রাখার পথেই হাঁটতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই সংশোধন হলে আমলাদের রাজ্যে নিয়োগ, কোন পদের দায়িত্বে তিনি যাবেন, এমন সব বিষয় কেন্দ্রই ঠিক করে দেবে। সেখানে রাজ্যের মতামতের প্রায় কোনও গুরুত্বই আর থাকবে না। এতদিন পর্যন্ত আমলা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে থাকলে তার রাশ কেন্দ্রের হাতে এবং রাজ্যে থাকলে তা নিয়ন্ত্রিত হয় রাজ্যের প্রশাসনিক কাজের উপর। কিন্তু সংশোধিত আইনে রাজ্যের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই সংশোধনী প্রস্তাবের বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে চিঠি দিয়েছে রাজ্য।
এদিকে আবার এই সংশোধনী প্রস্তাবে আরও কিছু রদবদল ঘটায় মোদী সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা চিঠিতে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রের নয়া সংশোধনী অনুযায়ী, রাজ্যে কর্মরত যে কোনও আইএস, আইপিএস-সহ যে কোনও কেন্দ্রীয় আমলাকে যে কোনও সময় দেশের যে কোনও প্রান্তে বদলি করতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। এক্ষেত্রের রাজ্যের অনুমতির প্রয়োজন নেই। রাজ্য সরকার ‘রিলিজ’ না দিলে কেন্দ্রের হাতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। মোদী সরকারের এই সংশোধনী প্রস্তাবর আমলাদের মধ্যে ভীতি ও অস্থিরতা তৈরি করবে বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, এই সংশোধনী কার্যকর হলে আমলাদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হবে যা তাঁদের কাজে প্রভাব ফেলবে। রাজ্যের প্রতি আর তাঁদের আনুগত্য থাকবে না।