গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা নাগাদ উত্তরবঙ্গের ময়নাগুড়ির দোমোহনিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয়েছিল বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসকে। এবার সেই ঘটনার তদন্তে চাঞ্চল্যকর মোড়। উত্তর-পূর্ব রেল তাদের যে দুর্ঘটনা সংক্রান্ত রিপোর্ট তৈরি করেছে, সেই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের যে ইঞ্জিন ছিল সেটা প্রতি মাসে যে পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষা করা হয়নি। কেন পরীক্ষা হয়নি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে দুর্ঘটনার তদন্তে থাকা কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি।
প্রসঙ্গত, ১৩ তারিখের দুর্ঘটনা সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তৈরি করেছে আলিপুরদুয়ার ডিভিশন। সেই রিপোর্টের দ্বিতীয় পয়েন্টে উল্লেখ করা হয়েছে ইঞ্জিনের নম্বর আইসি ও আইএ কবে করা হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে আইসি করা হয়েছে গত বছরের ১১ নভেম্বর। আইএ বাকি আছে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি থেকে। রেলের রিপোর্টে তাই উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় রেল পরিচালনার জন্য যে বই আছে। তার চ্যাপ্টার থ্রি’তে লোকোমটিভ রক্ষণাবেক্ষণের নিয়মাবলী উল্লেখ করা আছে। এই চ্যাপ্টারের ৩০৩০২-তে বলা আছে শিডিউল ইন্সপেকশনের নিয়মকানুন। আর এই পরীক্ষা মোট ৭টি ভাগে বিভক্ত। সেই রুল বুক অনুযায়ী, আইএ-এর মানে হল প্রতি মাসে পরীক্ষা। আর আইসি পরীক্ষা হল প্রতি চার মাসের পরীক্ষা। অর্থাৎ রুল বুক অনুযায়ী প্রতি মাসে ইঞ্জিনের যে পরীক্ষা হয়, সেই পরীক্ষা করা হয়নি৷
অন্যদিকে এই ট্রেন দূুর্ঘটনার তদন্তে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির সামনে এসেছে একটি ভাইরাল ভিডিও। সিসিটিভি ফুটেজের সেই ভিডিওতে একটি লেভেল ক্রসিং দেখা যাচ্ছে। গত ১৩ তারিখ, রাত ২টো ৪ মিনিটের ভিডিও এটি। ১২২ নম্বর এই লেভেল ক্রসিংয়ের ফুটেজ অনুযায়ী, যে ট্রেনটিকে দেখা যাচ্ছে সেটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের ছবি।
টাইম টেবল অনুযায়ী ট্রেনটি সেই সময় দীনদয়াল উপাধ্যায়-পটনা সেকশনের মধ্যে থাকা উচিত। সূত্র অনুযায়ী এই ভিডিও আসলে চুনার স্টেশনের। এই ভিডিওতে লাইনের ছবি দেখলেই বোঝা যাবে, ট্রেন আসার আগার আর ট্রেন চলে যাওয়ার পরের ছবি তাদের ভাবাচ্ছে। দুর্ঘটনাস্থলে যে ভাবে স্লিপারের মাঝের অংশ ভাঙা ছিল, সেরকমই আঘাতের চিহ্ন ট্রেন চলে যাওয়ার পরে ওই লেভেল ক্রসিংয়ে স্লিপারের অংশে দেখা গেছে। ফলে ধরে নেওয়া হচ্ছে ইঞ্জিনের ট্র্যাকশন মোটরের সমস্যা দীর্ঘ সময় ধরে চলছিল।