লক্ষ্য কর্মসংস্থান। তাই বিনিয়োগ টানতে চেষ্টার ত্রুটি রাখছে না রাজ্য সরকার। তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এ ব্যাপারে উদ্যোগী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আয়োজন করা হচ্ছে বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলন থেকে শুরু করে রাজ্যজুড়ে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট শিল্পের সিনার্জি। ইজ অব ডুইং বিজনেস-এর অধীনে অনলাইনে আরও সহজ করা হয়েছে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক ছাড়পত্র পাওয়ার প্রক্রিয়া।
আগেও এই পুর এলাকাগুলিতে অনলাইনের মাধ্যমে ট্রেড লাইসেন্সের আবেদন করা যেত। কিন্তু শংসাপত্র পেতে সংশ্লিষ্ট পৌরসভার কার্যালয় যাওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে নতুন ব্যবস্থা চালু হতেই ছবিটা বদলেছে। পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী এই সাড়ে তিন মাসে প্রদান করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৯১৪ ট্রেড।
পুরো প্রক্রিয়াটিই অনলাইনে চলায় কোভিডের সংক্রমণ বাড়লেও আবেদনে ভাটা পড়েনি। এমনকী সরকারি সাপ্তাহিক ছুটির দিন শনি ও রবিবারেও এখন আর বন্ধ থাকে না ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের কাজ। একই পদ্ধতিতে ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের কাজও সেরে ফেলা যায়। ফলে বেড়েছে রাজস্ব আদায়ও।
রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, ‘এই রিয়েল টাইম ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের ব্যবস্থায় ভীষণভাবে উপকৃত হয়েছেন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। ছোট হোক কিংবা বড়, বিভিন্ন মাপের বিনিয়োগে উৎসাহ জুগিয়েছে এই পরিষেবা। দ্রুত ট্রেড লাইসেন্স হাতে পেয়ে ইতিমধ্যে ব্যবসা শুরু করে ফেলেছেন অনেকেই।’
গত অক্টোবর মাসেই ১২৫টি পুরসভা এলাকায় শুরু হয় ‘রিয়েল টাইম’ ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুর ব্যবস্থা। আর প্রযুক্তিতে ভর করে এই ক্ষেত্রে নয়া নজির গড়ল রাজ্য। মাত্র ১০০ দিনেই ইস্যু হয়েছে প্রায় ৪৮ হাজার ট্রেড লাইসেন্স। আগে এই সংখ্যক ট্রেড লাইসেন্স প্রদানে সময় লাগত এক বছরেরও বেশি।
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জোর দিয়েছিলেন ই-গভর্নেন্সে। প্রথম পাঁচ বছরেই সরকারি কাজকর্মে ১০০ শতাংশ ই-গভর্নেন্স চালু হয়। এবার শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তৈরিতে জোর দিয়েছে নবান্ন। বিনিয়োগে ছাড়পত্রের প্রক্রিয়া সরলীকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরকারি লাল ফিতের ফাঁস এড়িয়ে ন্যূনতম সময়ে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করতে চালু হয় ‘রিয়েল টাইম’ ব্যবস্থা।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে আবেদনকারীকে ব্যবসা ও অফিস-দোকান-গুদাম সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনে আপলোড করতে হয়। সেখানেই জানিয়ে দেওয়া হয় অ্যাপ্লিকেশন ফি বাবদ কত টাকা দিতে হবে। অনলাইন সেই টাকা মেটালে কোনও প্রাথমিক পরিদর্শন ছাড়াই মেলে ট্রেড লাইসেন্সের শংসাপত্র।
তবে ব্যবসা শুরুর ছ’মাস বাদে সংশ্লিষ্ট পুর এলাকার আধিকারিকরা সেই অফিস-দোকান-গুদাম পরিদর্শন করতে পারেন। যদি দেখা যায় যে আবেদনকারী মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে লাইসেন্স বাতিল করা হয়। প্রয়োজনে নেওয়া যেতে পারে আইনি ব্যবস্থাও।