পেশায় চিকিৎসক। বর্তমানে যারা রীতিমতো যমদূতের সঙ্গে লড়াই করে করোনা রোগীদের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসছেন সেই ‘ভগবান’-দের তালিকায় রয়েছে তাঁর নামও। কিন্তু বিহারের এই চিকিৎসক সিভিল সার্জন ডাঃ বিভা কুমারী সিং নিয়েছেন করোনা টিকার একটা নয়, দুটো নয় মোট পাঁচটা টিকা। এখানেই শেষ নয়, ওই মহিলা চিকিৎসকের দাবি যে তিনি টিকা নেওয়ার পরে পাঁচবারই টিকার সরকারি শংসাপত্রও পেয়েছেন।
এমনকি একজন নাকি তাঁকে আধার কার্ডের পরিবর্তে প্যান কার্ডের মাধ্যমেই করোনার টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সম্প্রতি এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে নীতীশের রাজ্যে। অন্যদিকে গোটা বিহার জুড়েই যে করোনা টিকা নিয়ে ব্যাপক জালিয়াতি চলছে এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরে আরও একবার তা প্রমাণিত হল।
তবে এইরকম বেআইনিভাবে একাধিকবার করোনার টিকা নেওয়ার ঘটনা বিহারে যে এই প্রথম ঘটল তা কিন্তু নয়। দিন কয়েক আগেই এই রাজ্যে এক বৃদ্ধের সন্ধান মিলেছিল যিনি গত এক বছরে মোট ১৩ বার করোনার টিকা নিয়েছিলেন। বিহারের মাধিপুরার ওই বৃদ্ধের ঘটনায় রীতিমতো হতবাক হয়ে গিয়েছিল চিকিৎসক মহল। কিন্তু সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এক মাসের মধ্যেই আবারও পুনরাবৃত্তি ঘটল ওই একই ঘটনার। তবে সবথেকে আশ্চর্যজনক বিষয়টি হল এইবার এইভাবে বেআইনি উপায়ে টিকা নিয়েছেন যিনি তিনি নিজেই একজন চিকিৎসক।
জানা গিয়েছে, ওই মহিলা চিকিৎসক ডাঃ সিং করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেন ২০২১ সালের ২৮ জানুয়ারি। ওই বছরের মার্চ মাসের মধ্যেই তিনি করোনার সব ডোজই নিয়ে নেন। কিন্তু তারপরেও দেখা যায় যে, তিনি পরিচয়পত্র হিসাবে নিজের প্যান কার্ড দেখিয়ে ২০১২ সালের ৬ জানুয়ারি এবং ২০২১ সালের ১৭ জুন আরও দুবার টিকা নিয়েছেন। তিনি শেষ টিকা নিয়েছেন ২০২২ সালের ১৩ জানুয়ারি। তাঁর টিকার এই রেকর্ড সম্প্রতি সরকারি অধিকর্তাদের হাতে আসে। এরপরেই জানাজানি হয় পুরো বিষয়টি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সোমবার পাটনার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট চন্দ্রশেখর সিং বলেছেন, ‘প্রশাসন তদন্ত শুরু করেছে। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অন্যদিকে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ‘আমি আমার আধার কার্ড এবং ভোটার কার্ড ব্যবহার করে গত বছরের জানুয়ারি মাস থেকে একাধিকবার করোনার টিকা নিয়েছি। টিকাগুলি নেওয়ার পরে আমার পিঠের ব্যাথা অনেক কমেছে এবং এই এক বছরে আমার একবারও সর্দি, কাশি হয়নি।