অবশেষে জল্পনায় পড়ল ইতি। প্রায় এক মাস পিছিয়ে গেল আন্তর্জাতিক কলকাতা বইমেলা। আগামী ৩১শে জানুয়ারি বইমেলা হওয়ার কথা ছিল। তা পিছিয়ে ২৮শে ফেব্রুয়ারি করা হল। সোমবারই এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে গিল্ড। সূত্রের খবর, ৩১শে জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হলে বিধাননগরের ভোট সংক্রান্ত যে নির্বাচনী বিধি, তার একটা সংঘাত হচ্ছে। অর্থাৎ ভোটের আদর্শ আচরণবিধি থাকবে সেই সময়। তাই মেলা পিছোনোর আবেদন জানিয়েছিল গিল্ড। সেই আবেদনে সাড়া মিলেছে। ২৮শে ফেব্রুয়ারি সেন্ট্রাল পার্ক মেলা প্রাঙ্গণে বই মেলা শুরু হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ১২ই ফেব্রুয়ারি বিধাননগর পুরনিগমে নির্বাচন। অর্থাৎ সল্টলেকেও এদিন ভোট। নির্বাচনের গণনা যদি ১৫ই ফেব্রুয়ারি হয় তা হলে এই ১৫ তারিখ অবধি নির্বাচনের একাধিক বিধিনিষেধ সল্টলেক তথা গোটা বিধাননগরের জন্যই বহাল থাকবে। নিঃসন্দেহে এই সময় সল্টলেকে বইমেলার মতো আন্তর্জাতিক মানের মেলা আয়োজন করতে কিছুটা সমস্যা হবে। সেইমতোই রাজ্য সরকারের কাছে গিল্ডের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল মেলার দিন যেন পিছিয়ে দেওয়া হয়।
বরাবরই জানুয়ারির শেষের দিকে এক সপ্তাহ ধরে বইমেলা চলে। কিন্তু এবার ভোটের কারণে সেই সূচীতে বদল আনা হয়েছে। গিল্ডের তরফে ফেব্রুয়ারিতেই কলকাতা বইমেলা আয়োজনের ইচ্ছা প্রকাশ করা হয়েছিল বলে সূত্রের খবর। সেইমতো বই মেলা প্রায় এক মাস পিছিয়ে গেল। ২৮শে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন হবে বইমেলার। কোভিডের আবহে বইমেলা নিয়ে সংশয় ছিল বইপ্রেমীদের মনে। তবে সম্প্রতি নবান্ন কোভিডের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা জারি করে সেখানে জানিয়ে দিয়েছিল মেলা নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা রাজ্যের নেই। শুধুমাত্র খোলা আকাশের নিচে মেলার আয়োজন করতে হবে। একইসঙ্গে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। মাস্ক পরা, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা অত্যাবশ্যক। ফলে সেই সময়ই একটা ধারণা তৈরি হয়েছিল বইমেলা হয়ত বন্ধ হবে না। সোমবার গিল্ডের নয়া ঘোষণায় সেই ধারণায় সিলমোহর পড়ল।
উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে গিল্ডের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল ৩১ জানুয়ারি থেকে বইমেলা শুরু হবে। এবার বইমেলার থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ। বইমেলার উদ্বোধন এবারও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই হবে। গত বছর করোনার কারণে বইমেলা হয়নি। ফলে এবারের বইমেলা নিয়ে লেখক, প্রকাশকদের মধ্যে যেমন আলাদা উৎসাহ রয়েছে তেমনই বইপ্রেমীদের মধ্যেও আগ্রহ তুঙ্গে। ইতিমধ্যেই গিল্ডের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন কোন বিধি মেনে এবার তারা বইমেলার আয়োজন করছে। বলেই দেওয়া হয়েছে, মাস্ক ছাড়া বইমেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ নিষিদ্ধ। প্রত্যেকটি স্টলই খোলামেলা থাকবে। মাঠের ভিতর যতটা সম্ভব উন্মুক্ত এলাকা রাখা হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে হবে মেলায় ঘোরাফেরা। প্রয়োজনে স্টলের মাপ কমিয়ে দেওয়া হবে। থাকবে ই-পাসের ব্যবস্থাও।