করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে। ইতিমধ্যেই উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর এবং গোয়ার নির্বাচনী নির্ঘন্ট ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে আনুষ্ঠানিক ভাবে ভোটের দামামা যখন বেজে গিয়েছে, তখন টালমাটাল অবস্থা উত্তরপ্রদেশ বিজেপির। টিকিট বিতরণ শুরুর আগেই তীব্র হয়েছে দল ছেড়ে অন্য দলে যোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া। ২৪ ঘন্টার মধ্যেই রাতারাতি পদত্যাগ করেছেন যোগীর ক্যাবিনেটের ২ মন্ত্রী-সহ ৬ বিধায়ক। এই পরিস্থিতিতে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফার ৫৫টি আসনে ভোটের সম্ভাব্য ফলাফলের পূর্বাভাস রক্তচাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি নেতৃত্বের। এই আসনগুলিতে মুসলমান এবং দলিত ভোটব্যাঙ্কের আধিক্য বেশি। এসপি এবং আরএলডি জোট এই অঞ্চলের জন্য আগে থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, গত বিধানসভা ভোটে এই অঞ্চলে বিজেপি রীতিমতো ভাল ফলাফল করেছিল। কিন্তু রাজ্যের রাজনৈতিক শিবির বলছে ১৭ এবং ২২শের ভোটচিত্রটা একেবারেই বদলে গিয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলের মোরাদাবাদ, সহারনপুর, বিজনৌর, আমরোহা থেকে রাজ্যের মধ্যভাগে বদায়ুঁ বা শাহজাহানপুর পর্যন্ত বিস্তৃত এই ৫৫টি আসনে ২০১৭তে প্রবল মোদী হাওয়ার মধ্যে বিজেপি পেয়েছিল ৩৮টি আসন। কিন্তু সেই ভোটবাজারেও এসপি-র ঘরে আসে ১৫টি আসন। কংগ্রেস পায় দু’টি। এখান থেকে মোট ১১ জন মুসলমান প্রার্থী জয়ী হন এসপি-র টিকিটে। আবার ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে একত্রে লড়াই করে এসপি, বিএসপি এবং আরএলডি। আর এই অঞ্চলের (যা অন্তত এখানকার ৩৫টি বিধানসভা অঞ্চলের সমষ্টি) ৭টি লোকসভা আসনই পায় বিএসপি এবং এসপি। যার মধ্যে রয়েছে রামপুর, মোরাদাবাদ, বিজনৌরের মতো আসন।
উত্তরপ্রদেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারে এখানে বিজেপির দাঁত ফোটানো মুশকিল। কারণ এখানে মুসলিম এবং দলিতের পাশাপাশি ছড়ানো রয়েছে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণির ভোটও। যেখানে এসপি-র শক্তি বেশি। আবার এসপি-র দুর্গ রামপুরেও ভোট ১৪ ফেব্রুয়ারি। সতেরো সালে এসপি নেতা আজম খান এই জেলা থেকেই অষ্টম বারের জন্য জেতেন। পরে অবশ্য পদত্যাগ করে উনিশের লোকসভা ভোটে তিনি রামপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়লাভ করেন। অন্য দিকে ৪২ শতাংশ মুসলমান ভোটব্যাঙ্ক সম্বলিত সহারনপুরে প্রভাবশালী মুসলমান নেতা ইমরান মাসুদ কংগ্রেস থেকে সম্প্রতি যোগ দিয়েছেন এসপি-তে। তাঁর যোগদান ওই এলাকায় এসপি-আরএলডি জোটকে শক্তিশালী করবে বলেই দাবি অখিলেশ শিবিরের।