একুশের ভোটে ভরাডুবির পর থেকেই বঙ্গ-বিজেপিতে শুরু হয়েছে গোষ্ঠীকোন্দল, নেতাদের একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপের পালা। এরই মধ্যে রাজ্য কমিটিতে মতুয়া কমিটি না থাকায় দলের অন্দরে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে ‘বিদ্রোহের’ সুর। এই পরিস্থিতিতে, রবিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বাড়িতে বিজেপি নেতৃত্বের বৈঠককে কেন্দ্র করে তীব্র জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। ঠাকুরনগরে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বাড়িতে আচমকাই দেখা যায় কিছু ‘বিক্ষুব্ধ’ পদ্মনেতাকে। সেই তালিকায় ছিলেন, সায়ন্তন বসু, রীতেশ তিওয়ারি-সহ অনেকে। ছিলেন জয়প্রকাশ মজুমদারও। যদিও কী নিয়ে এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক, সে বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। মুখ খোলেননি শান্তনুও। তবে এ নিয়েই এবার নির্ঘোষ বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের।
সোমবার সকালে ইকোপার্কে ভ্রমণকালে দিলীপ বলেন, ‘আমারও মাঝেমধ্যে মনে হয় গ্রুপ লেফট করি। তাহলে কী হবে? তাহলে কেবল খবর হবে। সংবাদমাধ্যমের নজরে আসব। এর চেয়ে বেশি কিছু হবে না। কারণ, গ্রুপ লেফট করে সমস্যা সমাধান বা পদপ্রাপ্তি কোনওটাই হয় না। উল্টে অসম্মানিত হতে হয়। দলের অন্দরে কোনও সমস্যা তৈরি হলে সেটা ভেতরেই মিটিয়ে নেওয়া ভাল। সেই সুযোগও রয়েছে।’ এরপরেই শান্তনুর বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠক সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য, ‘কে কার বাড়িতে বৈঠক করবে তা নিয়ে কী বলার আছে! শান্তনু এখন খবরের নজরে আসছেন। তাই তাঁর বাড়িতে বৈঠক হলেই খবর হচ্ছে। তিনি তো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে যে কেউ দেখা করতে পারে।’
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক কালে বিজেপির নয়া রাজ্য ও জেলা কমিটি ঘিরে একাধিক বিতর্কের উদ্রেক হয়েছে। নতুন রাজ্য কমিটিতে মতুয়াদের কোনও প্রতিনিধি নেই বলে অভিযোগ তুলে কিছুদিন আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পাঁচ বিজেপি বিধায়ক বিধায়ক হোয়াটস অ্যাপের একটি গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তালিকায় ছিলেন অশোক কীর্তনিয়া, মুকুটমণি অধিকারী, সুব্রত ঠাকুর, অসীম সরকার এবং অম্বিকা রায়। পরে অম্বিকা রায় ‘ভুল’ বুঝে নিয়ে ফিরলেও বাকিরা ফেরেননি। এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যও করেননি। জল্পনায় ঘৃতাহুতি পড়ে বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দলীয় হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া ঘিরে। যদিও শান্তনু সে সময় জানিয়েছিলেন, ‘কেন গ্রুপ ছেড়েছি, সময়মতো জানাব।’ এরপর এখনও অবধি তিনি এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেননি। তবে রবিবার তাঁর বাড়িতে ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের বৈঠক অস্বস্তি বাড়িয়েছে দলের।