ফের একই অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেখা গেল নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। যদিও কোভিড আবহে এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত দু’জনই। রাজ্যে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চেই স্বাস্থ্য পরিষেবায় রাজ্যের একাধিক দিক উল্লেখ করে, তথ্য পরিবেশন করে পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নিউটাউনে যে ক্যাম্পাসটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন প্রধানমন্ত্রী, তা অনেক আগেই চালু করা হয়েছে বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি, ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পর্যাপ্ত পরিমাণে রাজ্যে যাতে বণ্টন করা হয়, এই অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে সেই দাবিও তুললেন মমতা। ফলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিছকই এক অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ রইল না। কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের কাঁটা রয়ে গেল তাতে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের উদ্বোধনে এই ভারচুয়াল অনুষ্ঠান পূর্বপরিকল্পিত ছিল। করোনা আবহে কেউই সশরীরে হাজির হয়ে ক্য়াম্পাসের ফিতে কাটার ঝুঁকি নেননি। ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন এ রাজ্যের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, সুভাষ সরকার, ছিলেন সাংসদ জন বার্লা, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দীর্ঘদিন পর কেন্দ্র-রাজ্যের যৌথ প্রকল্পের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতির দিকে নজর ছিল সব মহলের। অনুষ্ঠান শুরুর পর মুখ্যমন্ত্রীকে বক্তব্য রাখার অনুরোধ জানান সঞ্চলক। দেখা যায়, তিনি গোড়া থেকেই তথ্য-পরিসংখ্যানের দিকে জোর দিলেন মমতা।
চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস তৈরির ২৫ শতাংশ খরচ দিয়েছে রাজ্য। ১০ একর জমির উপর তৈরি ৪৬০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে রাজ্যের খরচ ১৩৪ কোটি। কেন্দ্র খরচ করেছে প্রায় ৫০০ কোটি। প্রধানমন্ত্রীকে রাজ্যের ভূমিকা সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করলেন, করোনা কালে এই ক্যাম্পাসে কাজ শুরু করা খুবই প্রয়োজন ছিল সেসময়। তাই আগেই তার উদ্বোধন করে চালু করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। পাশাপাশি রাজ্যে দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়েও তিনি কার্যত বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রীকে। তাঁর কথায়, “আপনারা বুস্টার ডোজ চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খুব ভাল। কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ না সম্পূর্ণ হলে কীভাবে বুস্টার ডোজ দেব। আগে রাজ্য পর্যাপ্ত দ্বিতীয় ডোজ ভ্যাকসিন পাক, ১০০ শতাংশের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হোক, তারপর বুস্টার ডোজ দেওয়ার কাজ শুরু হবে।” এছাড়া স্বাস্থ্যসাথী-সহ রাজ্যের একাধিক স্বাস্থ্যপ্রকল্পের কথা উল্লেখ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথা খুব মন দিয়েই শুনলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে জন পরিষেবার অনুষ্ঠানে কেন কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত ছায়া ফেলল, সেই প্রশ্ন উঠছে রাজনৈতিক মহলে।
‘জওয়ানেরা দিন রাত পাহারায় দাঁড়িয়ে আর আপনি ২০ মিনিট দাঁড়াতে পারছেন না?’ – মোদীকে প্রবল কটাক্ষ কুণাল কামরার
এবার পঞ্জাবের ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নিলেন জনপ্রিয় কমেডিয়ান কুণাল কামরা। বুধবার বিকেলে ভাটিন্ডার ঘটনা নিয়ে রীতিমতো উত্তপ্ত জাতীয় রাজনীতি। সভাস্থলে যাওয়ার পথে উড়ালপুলের উপর বিক্ষোভে মোদীর কনভয় আটকে থাকার ঘটনায় রাজনীতির জল বহুদূর গড়িয়েছে। তারই মাঝে কুণাল কামরার টুইটে নেটপাড়ায় ছড়াল শোরগোল। উল্লেখ্য, বুধবার ফিরোজপুরে একটি সভা করার কথা ছিল নরেন্দ্র মোদীর। সেইমতো হুসেইনওয়ালা থেকে ফিরোজপুরের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল মোদীর কনভয়। কিন্তু, মাঝপথে উড়ালপুলে বিক্ষোভের মুখে পড়ে যায় কনভয়। দীর্ঘক্ষণ সেখানেই আটকে থাকতে হয় প্রধানমন্ত্রীকে। শেষ পর্যন্ত সভা বাতিল করা হয়। ঘটনাকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় বড়সড় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। সেই নিয়েই উত্তপ্ত দেশের রাজনীতি। তপ্ত নেটদুনিয়াও। কমেডিয়ান কুণাল কামরার টুইটে সেই বারুদেই অগ্নিসংযোগ করল।
এদিন পঞ্জাবের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান কমেডিয়ান কুণাল কামরা। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মোদীকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। নাম না করে তিনি লেখেন, “জওয়ানেরা আমাদের জন্য সারারাত সারাদিন সীমান্তে পাহারায় মোতায়েন, সেখানে আপনি ১৪-২০ মিনিট ট্রাফিকে দাঁড়াতে পারছেন না!” ভারতের হাতেগোনা পলিটিক্যাল কমেডিয়ানদের মধ্যে অন্যতম কুণাল কামরা। প্রকাশ্যে মোদী-শাহ এবং মোদী-বিরোধী কথা বলে থাকেন তিনি। অতীতেও কখনও স্ট্যান্ড আপ চলাকালীন রসিকতার ছলে মোদী সরকারের খুঁতগুলি একেবারে পয়েন্ট করে দেখিয়েছেন। কখনও আবার ‘ডোন্ট ভোট ফর মোদী’ ক্যাম্পেইন চালু করেছেন। যা শুধু দেশে…