কুন্নুর হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় খারাপ আবহাওয়াকে দায়ী করছে তদন্ত কমিটি। বুধবার কমিটির প্রাথমিক রিপোর্ট সম্বন্ধে অবগত করা হয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে। সেই রিপোর্টে কী আছে, বিস্তারিত জানায়নি কোনও সূত্র।
তবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছে, ‘যান্ত্রিক ত্রুটি, অন্তর্ঘাত বা পাইলটের অদক্ষতা। এই তিনটি বিপিন রাওয়াত কপ্টার দুর্ঘটনার কারণ নয়। কোনও কারণে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ার জন্য ভারসাম্য হারিয়ে পাহাড়ে ধাক্কা মারে। তাতেই এই দুর্ঘটনা।‘
“পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে গোটা ঘটনার তদন্ত চলছে। সেই তদন্ত প্রক্রিয়ার ফল বেরনোর আগে কিছু বলতে চাই না। ঘটনার উপযুক্ত তদন্তের জন্য তাঁকে (এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিং) সব দিক খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।
কোথাও ত্রুটি ছিল কিনা বা ঠিক কী কারণে এই বিপর্যয়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” উল্লেখ্য, এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিংয়ের নেতৃত্বে তামিলনাড়ুর কুন্নুরে বায়ুসেনার চপার দুর্ঘটনার তদন্ত করছে বিশেষ দল। সেই কপ্টারের ব্ল্যাক বক্স এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার খতিয়ে দেখবে কমিটি।
গত ডিসেম্বরে তামিলনাড়ুর কুন্নুর জেলায় আচমকা ভেঙে পড়ে বায়ুসেনার চপার। মর্মান্তিক সেই দুর্ঘটনায় সিডিএস বিপিন রাওয়াত, তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াত, ব্রিগেডিয়ার এলএস লিড্ডার-সহ বেশ কয়েকজন সেনাকর্তা ও জওয়ান নিহত হন।
চপার বিপর্যয়ে গুরুতর জখম হন গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং। প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, চপার দুর্ঘটনার সত্য উদঘাটনে ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে ত্রিস্তরীয় যে তদন্ত হবে তার নেতৃত্বে থাকবেন এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিং। পরে রাজ্যসভাতেও একই ইস্যুতে বিবৃতি দিয়েছিলেন রাজনাথ সিং।
যান্ত্রিক ত্রুটি নাকি পাইলটের অসাবধানতা? নিছক দুর্ঘটনা নাকি ষড়যন্ত্র করে হত্যা? দেশের প্রথম সেনা সর্বাধিনায়ক বিপিন রাওয়াতের কপ্টার দুর্ঘটনার কারণ ঘিরে নানা মুনির নানা মত।
জোরদার তদন্তও চালাচ্ছে সেনাবাহিনীও। সূত্রের খবর, সেই তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চালক অসতর্ক হয়ে মেঘের মধ্যে ঢুকে পড়েছিলেন। তার জেরেই বিপত্তি ঘটে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছেন ভারতীয় সেনার এয়ার মার্শাল মানবেন্দ্র সিং। বহু বছর তিনি হেলিকপ্টার পাইলট হিসাবে সেনায় রয়েছেন। আর এমন ধরনের দুর্ঘটনার তদন্তে এদেশে তাঁর জুরি মেলা ভার বলে মনে করেন অনেকেই।
রিপোর্টে বলা হচ্ছে, মেঘের মধ্যে হেলিকপ্টার ঢুকে পড়াতেই বিপদ বেড়ে যায় । যদিও হেলিকপ্টার নিয়ন্ত্রণে যোগ্য ব্যক্তিরা ছিলেন, তবুও পরিস্থিতিগত কিছু অসতর্কতার পরিণামেই এই দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
এই ঘটনায় কোনও গাফিলতি জড়িয়ে রয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে তদন্তে। অত্যাধুনিক নিরাপত্তাবলয়ে থাকা সিডিএস কপ্টার কীভাবে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তামিলনাড়ুর কুন্নুরের কাছে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রায় এক মাস কাটতে চলল।
গত ৮ ডিসেম্বরের কপ্টার দুর্ঘটনায় সিডিএস বিপিন রাওয়াতের মৃত্যু হয়। তাঁর স্ত্রী মধুলিকা রাওয়াতও মারা যান। একই সঙ্গে মারা যান ব্রিগেডিয়ার এলএস লিড্ডর,লেফ্টনেন্ট কর্নেল হরজিন্দর সিং, গ্রুপ ক্যাপ্টেন বরুণ সিং। কপ্টার দুর্ঘটনার তদন্তকারী অফিসাররা এই ঘটনা ঘিরে যাবতীয় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন।