করোনা আবহের মধ্যেই চলতি মাসে ভোট হতে চলেছে রাজ্যের চার পুরসভায়। তবে যথাযথ ভাবে কোভিড বিধি মানতে হবে সকলকেই। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ না মানলে পেতে হবে শাস্তিও। কোভিড নিয়ে কড়া অবস্থান নিল কমিশন। অন্য দিকে, প্রচারেও লাগাম টানার ভাবনাচিন্তা করছে তারা। সূত্রের খবর, সভাগুলিতে ২০০-র বেশি লোক যাতে না হয় সে দিকেও নজর দিতে চলেছে কমিশন।
প্রসঙ্গত, আগামী ২২শে জানুয়ারি আসানসোল, শিলিগুড়ি, বিধাননগর ও চন্দননগরের পুরভোট রয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে ওই ভোটগুলি নিয়ে বেশ কিছু বিধি বলবৎ করেছে কমিশন। তবে সেই বিধি অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না বলেই অভিযোগ। সম্প্রতি আসানসোলের একটি ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে কমিশন খুবই অসন্তুষ্ট। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, ওই বিষয়টি খতিয়ে দেখে কড়া অবস্থান নেবে তারা। পাশাপাশি বুধবার মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে কোভিড বিধি নিয়ে বৈঠক করে কমিশন। সেখানেই কমিশন পুলিশ, প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, কোভিড বিধি না মানলে কঠোর ব্যবস্থা নেয় যেন তারা। প্রয়োজনে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনও প্রয়োগ করার কথা বলেছে।
পাশাপাশি, পদযাত্রা ও মিছিল নিষিদ্ধ করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিতর্ক তৈরি হয় সভার নির্দেশ ঘিরে। কমিশন জানিয়েছিল, ৫০০ লোক নিয়ে খোলা মাঠে এবং ২০০ লোক নিয়ে বন্ধ ঘরে সভা করা যেতে পারে। প্রশ্ন ওঠে, পুরসভার প্রচারে ৫০০ লোক মানে তো অনেকই। কেন কোভিড পরিস্থিতিতে প্রচার বাতিলের পরিবর্তে এমন নির্দেশ দিল কমিশন? এই বিতর্কের মধ্যে পড়ে এ বার ওই সিদ্ধান্ত ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কমিশন। কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, “নির্বাচনের সঙ্গে মানুষের স্বাস্থ্যের কথাও আমাদের মাথায় রাখতে হচ্ছে। তাই প্রয়োজন পড়লে ৫০০-র পরিবর্তে ২০০ লোক নিয়ে সভার অনুমতি দিতে পারে কমিশন।” তবে এই বিষয়ে আভাস পাওয়া গেলেও, এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি কমিশন।
উল্লেখ্য, অনেকে এই পরিস্থিতিতে ভোট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকী ভোট বাতিল চেয়ে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয় কলকাতা হাই কোর্টে। আবার যে ভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আগামীতে ভোট করানো যাবে কি না তা নিয়ে চিন্তায় সরকারও। কারণ, নিত্য দিন প্রচুর পুলিশ কর্মী কোভিড আক্রান্ত হচ্ছেন। ভোট হলে তাদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। আবার কমিশন সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার থেকে চার পুরসভায় কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল পাঁচ জন বিশেষ পর্যবেক্ষক ও ১২ জন সাধারণ পর্যবেক্ষকের। কিন্তু বুধবার খবর মেলে সাধারণ পর্যবেক্ষকদের মধ্যে পাঁচ জন কোভিড পজিটিভ। ফলে ফের নতুন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে হবে কমিশনকে। কলকাতা পুরভোটের মতো এই ভোটেও ভোটাদের টিকা দেওয়ার কাজ শুরু করবে কমিশন। আগামী ১৭ই জানুয়ারি থেকে ২১শে জানুয়ারি পর্যন্ত চারটি পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে শিবির করে টিকা দেওয়া হবে।